বিশেষণ পদ
বিশেষণ পদ :- যে পদের দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম, ক্রিয়াপদের দোষ-গুণ, ভালো-মন্দ, পরিমাণ, অবস্থা ইত্যাদি বোঝায় তাকে বিশেষণ পদ বলে।
উদাহরন :- উজ্জ্বল নক্ষত্র, ধবধবে সাদা বিছানা, চলন্ত ট্রেন ( বোল্ড শব্দ গুলি বিশেষণ পদ)
বিশেষণ পদের প্রকারভেদ :- বিশেষণ পদ সাধারণত দুই প্রকার – (ক) নাম বিশেষণ (খ) ক্রিয়া বিশেষণ।
(ক) নাম বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামের অর্থাৎ নাম পদের দোষ, গুণ, অবস্থা , পরিমাণ, উপাদান ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে নাম বিশেষণ বলা হয়।
নাম বিশেষণের প্রকারভেদ :- নাম বিশেষণ সাধারণত তিন প্রকার – (i) বিশেষ্যের বিশেষণ (ii) বিশেষণের বিশেষণ (iii) সর্বনামের বিশেষণ
(i) বিশেষ্যের বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ, সংখ্যা প্রভৃতিকে বোঝায় তাকে বিশেষ্যের বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :- নীল ফুল, হলুদ পাখি, শীতল বাতাস, সুন্দর মুখ ইত্যাদি।
বিশেষ্যের বিশেষণের প্রকারভেদ :- বিশেষ্যের বিশেষণ সাধারণত পাঁচ প্রকার – (A) সংখ্যাবাচক বিশেষণ (B) পূরণবাচক বিশেষণ (C) গুণবাচক বিশেষণ (D) সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ (E) পরিমাণ বাচক বিশেষণ
(A) সংখ্যাবাচক বিশেষণ :- যে বিশেষণের দ্বারা বিশেষ্যের সংখ্যা নির্দেশ করা হয় তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলা হয়।
উদাহরণ :- এক দিন, পাঁচ মাস, দশ বছর, পাঁচটি কলম, দুটো ছেলে, লাখ টাকা, কোটি বৃক্ষ ইত্যাদি।
(B) পূরণবাচক বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্য পদের পর্যায়ক্রমিক অবস্থান বোঝানো হয়, তাকে পূরণবাচক বিশেষণ বলা হয়।
উদাহরণ :- প্রথম বালক, দ্বিতীয় অধ্যায়, দশের নামতা, পয়লা বৈশাখ, বাইশে শ্রাবণ, তেরোর পাতা ইত্যাদি।
(C) গুণবাচক বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্যের গুন নির্দেশ করে তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :- পবিত্র মন্দির, ভালো ছেলে, সুন্দর দৃশ্য, লম্বা গাছ, উঁচু প্রাসাদ, মধুর ভাষণ, বড়ো নদী, ইত্যাদি।
(D) সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্যের পরে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে বিশেষণ পদ গঠন করা হয়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :– মোগলাই পরোটা, কলকাতাই ফ্যাশন, ভারতীয় সংস্কৃতি, রাবীন্দ্রিক কাব্য, কাশ্মীরি শাল, ইত্যাদি।
(E) পরিমাণ বাচক বিশেষণ :- যে বিশেষণের সাহায্যে বিশেষ্যের পরিমাণ নির্দেশ করা হয়, তাকে পরিমাণ বাচক বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :- এক লিটার তেল, দু’কেজি মাছ, দুই বিঘা জমি, একমুঠো চাল, হাত দশেক ফিতা, ইত্যাদি।
(ii) বিশেষণের বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদের দ্বারা বিশেষণের বিশেষত্ব বিশেষভাবে প্রকাশিত হয় তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :- ধবধবে সাদা জামা, টকটকে লাল ফুল, অতিশয় বুদ্ধিমান লোক, বেশ কনকনে ঠাণ্ডা ইত্যাদি।
(iii) সর্বনামের বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদ কোন সর্বনাম পদের গুণ, অবস্থা, প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দেশ করে তাকে সর্বনামের বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :- তুমি অধম – তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন ? ও মূর্খ কি প্রকারে বলিবে ? এখানে অধম, উত্তম, মূর্খ বিশেষণগুলি যথাক্রমে তুমি, আমি এবং ও সর্বনাম পদের পরে বসেছে। তাই ‘অধম’, ‘উত্তম’, ‘মূর্খ’ সর্বনামের বিশেষণ।
(খ) ক্রিয়া বিশেষণ :- যে বিশেষণ পদের দ্বারা কোনো ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমান, স্থান ও সময় বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ পদ বলে।
উদাহরণ :- লেখাটা তাড়াতাড়ি সেরে নাও। গাড়িটি জোরে ছুটছে। কাজটি সহজে করা যাবে না। ইত্যাদি।