fbpx

পথের দাবি: সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

পথের দাবি হতে সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর।দশম শ্রেণী বাংলা – গল্প ‘পথের দাবি’ – প্রশ্ন ও উত্তর | Class 10 th Bengali Galpo Pather Dabi question and answer 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণী বাংলা – গল্প ‘পথের দাবি’  শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – থেকে প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Galpo Pather Dabi থেকে MCQ প্রশ্ন ও উত্তর : দশম শ্রেণী বাংলা – গল্প পথের দাবি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – বহুবিকল্পভিত্তিক (MCQ) প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হল Class 10 th Bengali Galpo Pather Dabi MCQ নিচে দেওয়া হলো। WBBSE madhyamik BengaliGalpo Pather Dabi Question and Answer, Suggestion, Notes – মাধ্যমিক দশম শ্রেণী বাংলা – গল্প ‘পথের দাবি’ থেকে MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer – বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী West Madhyamik Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুবই ইম্পর্টেন্ট।

তোমারা যারা ২০২৪ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য পথের দাবি (দশম শ্রেণী বাংলা – গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – MCQ প্রশ্ন ও উত্তর। Class 10 (madhyamik) BengaliGalpo Pather Dabi MCQ Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো মনযোগ সহকারে পড়তে পারো। 

বিষয়বাংলা – গল্প
গল্পপথের দাবি
রচনাশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
শ্রেণীদশম শ্রেণী বাংলা

পথের দাবী: দশম শ্রেণী বাংলা- MCQ TEST

Table of Contents

পথের দাবি হতে সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

পথের দাবি – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়


পথের দাবি হতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

১। ‘বাবুটির স্বাস্থ গেছে কিন্তু শখ ষোলোআনায় বজায় আছে’ – কে কার সম্পকে এই কথা বলেছন? তার সম্পর্ক বক্তার এরূপ উক্তির কারণ কি?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশে বাংলার দক্ষ পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু, বিপ্লবী সবসাচী মল্লিক সন্দেহে ধৃত গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে একথা বলছেন।

গিরিশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি, তার বুক থেকে একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। পরণে বিলাতি মিলের কালো মখমল পড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, পায়ে সবুজ রঙের ফুলমোজা, বার্ণিশ করা পাম্পসু, হাতে হরিণের শিং -এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। রোগা ক্ষীন দেহি মাথুষটির এই পোশাকের বাহার দেখেই নিমাইবাবু আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

২। “কি রূপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি” – কার প্রতি কার এই উক্তি? এই উক্তির কারণ কি?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশে বিপ্লবী সবসাচী মল্লিক সন্দেহে ধৃত গিরিশ মহাপাত্রের প্রতি বাংলার দক্ষ পুলিশ অফিসার নিমাইবাবুর এই উক্তি।

গিরিশ মহাপাত্রের জিনিসপত্র তল্লাশি করে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে কলকেটি পথে কুড়িয়ে পেয়েছে। যদি কখনও কারও কাজে লাগে তাদের দেওয়ার জন্য সে নিজের কাছে কলকেটি রেখেছে। তার এই অদ্ভুত পরোপকারের ইচ্ছার জন্য নিমহিবাবু তাকে সদাশয় ব্যক্তি বলেন।

৩। ‘যাঁকে তিনি দেশের টাকায় দেশের লোক দিয়ে শিকারের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছেন তিনি ঢের বেশি আমার আপনার’ – একথা কে কাকে বলেছেণ ? এই উক্তির কারণ কি?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশে অপূর্ব, রামদাস তলওয়ারকরকে একথা বলেছেন।

পুলিশের কর্তা নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর আত্মীয়, অপূব তাঁকে কাকা বলে ডাকে। আর এটাও জানে যে তিনি তার শুভাকাঙ্খী। কিন্তু যাঁকে ধরার জন্য পুলিশর কর্তা এত চেষ্টা করেছেন তিনি আসলে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক। এই সব্যসাচীর দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশের জন্য তাঁর স্বার্থত্যাগ অপূর্বকে মুগ্ধ করেছিল। অপূর্ব নিজেও স্বদেশকে ভালোবাসে তাই সব্যসাচীর মতো মহাপ্রাণ ব্যক্তি নিজের আত্মীয়ের থেকেও তার অনেক বেশী কাছের। 

৪। “কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ” – কার চোখের কথা বলা হয়েছে ? চোখ দুটির বর্ণনা দাও।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশের উদ্ধৃতাংশটিতে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক অর্থাৎ ছদ্মবেশি গিরিশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে। 

রুগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারি গিরিশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় ছিল তার দুটি চোখ ও চোখের দৃষ্টি। সেই চোখ ছোটো কি বড়ো, টানা কি গোল, দীপ্ত কি প্রভাহীন সে বিবরণ দিতে যাওয়া বৃথা। এক গভীর জলাশয়ের অতলতা তাঁর চোখ দুটিকে যেন অন্য মাত্রা দান করেছে। তার কোন অতলে চোখের মালিকের প্রাণ শক্তি লুকিয়ে আছে তা দেখে বোঝা যায় যে, ওই দৃষ্টির সম্মুখে খেলা চলবে না। সাবধানে দূরে সরে দাঁড়াতে হবে।

৫। “বুড়ো মানুষের কথাটা শোন” – বুড়ো মানুষ কে? তার কোন কথা শুনতে বলা হয়েছে? 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশের আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে বুড়ো মানুষ বলতে স্নেহশীল ও পৌঢ় পুলিশ দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বোঝাতে চেয়েছেন।

গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশি বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় এলে পুলিশ তাকে আটক করে। তল্লাশিতে তাঁর পকেট থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায়। কিন্তু তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু দারোগা নিমাইবাবু দেখেই বুঝতে পারেন যে গিরিশ মহাপাত্রের চেহারায় সর্বত্রই গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ বিদ্যমান। তাই রুগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে পরিণত বয়স্ক নিমাইবাবু স্নেহার্দ্র কণ্ঠে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন।

৬। গিরিশ মহাপাত্রের চেহারা কেমন ছিল?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ উপন্যাসের মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরিশ মহাপাত্রের তের ছদ্মবেশে বার্মায় আসেন। তার বেশভুষা ও চেহারা দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। তার খুব ফর্সা গায়ের রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে এসেছে। অত্যন্ত রোগা চেহারা, বয়স ৩০-৩২ -এর কোঠায় হলেও সর্বক্ষণ কাশির দমকে হাঁপাতে থাকা মানুষটির আয়ু সম্পর্কে সন্দেহ জাগে। কিন্তু তার উজ্জল ও গভীর চোখ দুটির দৃষ্টি অদ্ভূত। এরই কোনোও অতল তলে তাঁর ক্ষীণ প্রাণশক্তিটুকু লুকোনো আছে। মৃত্যুও যেন সেখানে প্রবেশ করতে সাহস করে না।

৭। “তাছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে” – অপূর্বর লজ্জার কারণ কি? সেটি তার কাছে লজ্জার কারণ হয়েছিল কেন?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর লজ্জার কারণ ছিল বাংলাদেশের দক্ষ পুলিশ নিমাইবাবু ছিলেন তার বাবার বন্ধু, আত্মীয় স্থানীয়।

দেশপ্রেমিক অপূর্বর চোখে দেশের শত্রু ইংরেজদের বহাল করা পুলিশ বাহিনীর কর্তা নিমাইবাবুর চাকরিটি ছিল দেশদ্রোহিতার। ইংরেজদের নুন খেয়ে তাদের হয়ে দেশের বিপ্লবীদের ধরপাকড় করাই ছিল নিমাইবাবুর মতো পুলিশদের কাজ। যে ইংরেজ প্রতিনিয়ত দেশবাসীকে শোষনে, পীড়নে, অপমানে, অত্যাচারে জর্জরিত করে তুলে সেই ইংরেজদের দাসত্বরত আত্মীয়কে আপন আত্মীয় বলতে অপূর্বর লজ্জাবোধ করেছে।

৮। “তুমি তো ইউরোপিয়ান নও” – কে কাকে বলেছিলেন? এর কারণ কি? 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ পাঠ্যাংশে বার্মা পুলিশের জনৈক সাব ইন্সপেক্টর অপূর্বকে কথাটি বলেছিলেন।

অপূর্ব ট্রেনে করে ভামো নগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। প্রথম শেণীর টিকিট কেটে সে ভেবেছিল নিশ্চিন্ত মনে যাত্রা করতে পারবে, কিন্তু তা হয় নি। বিপ্লবী সব্যসাচীর বার্মা আসার খবর পেয়ে আতঙ্কিত ব্রিটিশ প্রশাসন অ-ইউরেপিয়ান যাত্রীদের নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। অপূর্বকেও বার তিনেক ঘুম ভাঙিয়ে তার নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করে গিয়েছিল। এই ভাবে বার বার পুলিশের লোক বিরক্ত করায় সে যখন প্রতিবাদ করে তখন বর্মার সাব ইন্সপেক্টর কটু কণ্ঠে আলোচ্য মন্তব্যটি করে।

৯। ‘তাছাড় এত বড়ো বন্ধু’ – এত বড় বন্ধু কে? বন্ধুত্বের পরিচয় দাও? 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশে বন্ধু বলতে দরদি এক খ্রিষ্টান মেয়ের কথা বলা হয়েছে।

গতকাল রাতে অপূর্বর ঘরে চুরি হয়। কিন্তু তাঁর উপরের ঘরের খ্রিস্টান মেয়েটির দয়ায় টাকা পয়সা ছাড়া আর সমস্ত বেঁচে গেছে। সে চোর তাড়িয়ে দরজায় নিজে তালা বন্ধ করেছে। অপূর্ব ফিরে এলে চাবি খুলে ছড়ানো জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়েছে এবং কি কি আছে ও কি কি গেছে তার একটা ফর্দ তৈরি করে দিয়েছে। এই জন্য মেয়েটির তৎপরতা, কর্মকুশলতা অপূর্বকে মুগ্ধ করায় সে মেয়েটিকে যথার্থ বন্ধু বলে বিবেচনা করে উদ্ধৃত কথাটি বলেছে।

১০। “পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হয়েছিল” – কাকে কেন নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হয়েছিল? 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত আমাদের পাঠ্য কাহিনী ‘পথের দাবি’ রচনায় রাজনৈতিক সন্দেহ ভাজন সবসাচী মল্লিককে পুলিশ অফিসার নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হয়েছিল।

পুলিশ অফিসারের ধারনা হয়েছিল যে, ছদ্মবেশধারী গিরীশ মহাপাত্রই হল সব্যসাচী মল্লিক। তিনি ছিলেন মহান বিপ্লবী, পরাধীন দেশের রাজ বিদ্রোহী ও মুক্তি পথের অগ্ৰদূত। ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী যে আন্দোলন দানা বেঁধে ছিল তার ঢেউ বার্মা মুলুকেও আছড়ে পড়েছে। আর সেই কারণেই পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু সব্যসাচী মল্লিককে পাকড়াও করতে এসেছেন।

১১। “যাঁকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন” – বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কোন কালচারের কথা বলেছেন?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত আমাদের পাঠ্য কাহিনী ‘পথের দাবি’ রচনার আলোচ্য অংশটির বক্তা স্বদেশ প্রেমিক অপূর্ব।

গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে থাকা সব্যসাচীকে যখন পুলিশ অফিসারের সামনে হাজির করা হল তখন তার পোশাক-পরিচ্ছদ, দৈহিক অবস্থা এবং তার ট্যাঁক ও পকেট থেকে পাওয়া জিনিসপত্র দেখে অপূর্ব নিশ্চিত হয় যে, এই ব্যক্তি কিছুতেই সব্যসাচী মল্লিক ধন।। কারণ, সব্যসাচী মল্লিক হলেন একজন মেধাবী, প্রজ্ঞাবান, বিলেত ফেরত, চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি প্রাপ্ত ব্যক্তি। এই সব্যসাচী মল্লিকের কালচার আর অসুস্থ গিরিশ মহাপাত্রের কালচার যে একেবারেই আলাদা সে কথাই বলা হয়েছে আলোচ্য অংশে।

১২। “সহসা আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বোধ করি বেশিদিন নাই” – বক্তা কে? তিনি কেন এমন উক্তি করেছেন ?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত আমাদের পাঠ্য ‘পথের দাবি’ রচনায় আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন লেখক স্বয়ং।

রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে রেঙ্গুন পুলিশ আটক করে পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবুর কাছে হাজির করা হয়। তার গায়ের অতি গৌর বর্ণ রোদে পুড়ে, যেন তামাটে হয়ে গেছে। বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না হলেও সর্বক্ষণ কাশির দমকে হাঁপাতে থাকা মানুষটির আয়ু সম্পর্কে সন্দেহ জাগে। ভিতরের কোনো এক অজানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে তার সমস্ত দেহটা দ্রুত বেগে ক্ষয়ের দিকে চলেছে । তাই লেখকের এরকম উক্তি।

১৩। দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে” – আলোচ্য অংশের তৎপর্য লেখ।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবি’ রচনাংশে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে ধৃত গিরিশ মহাপাত্রের প্রতি বাংলার একজন পুলিশ অফিসার জগদীশবাবুর এই উক্তি।

গিরিশ মহাপাত্রের জিনিসপত্র তল্লাশি করে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে কলকেটি পথে কুড়িয়ে পেয়েছে। যদি কখনও কারও কাজে লাগে তাদের দেওয়ার জন্য সে নিজের কাছে কলকেটি রেখেছে। তার এই অদ্ভুত পরোপকারের ইচ্ছার জন্য জগদীশবাবু তাকে দয়ার সাগর বলেন।

১৪। “কই এই ঘটনা তো আমাকে বলেন নি” – বক্তা কে ? কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত আমাদের পাঠ্য ‘পথের দাবি’ রচনার সংশ্লিষ্ট অংশটির বক্তা হলেন রামদাস তলওয়ারকর।

স্বদেশ প্রেমিক অপূর্ব রামদাসের সঙ্গে কথোপকথন কালে পরাধীনতার গ্লানিময় দিকের কথা তুলে ধরেছেন। শ্বেতাঙ্গ শাসকদের দ্বারা ভারতবাসী অত্যাচারিত ও লজ্জিত হত, অপূর্ব এদেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাকে নিজের দেশেই অপমানিত ও লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। ফিরিঙ্গি যুবকেরা তাকে প্লাটফর্ম থেকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়। অথচ আমাদের দেশের মানুষ দীর্ঘ পরাধীনতার কারণে তার বিন্দু মাত্র প্রতিবাদ করে নি। এই অপমান, অত্যাচারের কথা স্টেশন মাষ্টারকে জানাতে গেলে তিনি তাকে কুকুরের মতো বিতাড়িত করেন। এই ঘটনার কথাই আলোচ্য অংশে বলা হয়েছে।


পথের দাবি হতে রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মান – ৫

১। তোমার পাঠ্য রচনায় গিরিশ মহাপাত্রের চরিত্রটি যে ভাবে চিত্রিত হয়েছে তা সংক্ষেপে লেখ।

অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বিখ্যাত রাজনৈতিক উপন্যাস হল ‘পথের দাবি’, যার কেন্দ্রীয় চরিত্র তথা প্রধান চরিত্র মহান বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক। আমাদের পাঠ্য রচনায় তাঁকে আমরা পাই গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে।

রেঙ্গুন পুলিশ স্টেশনে রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে সন্দেহ করা সব্যসাচীকে দারোগা নিমাইবাবু জিজ্ঞাসাবাদ করেও তাঁকে ধরতে পারেন নি। কারণ, সব্যসাচী তার অতি সাধারণ চেহারা ও পোশাক নিয়ে নিজেকে গিরিশ মহাপাত্র বলে অভিহিত করে সহজেই পুলিশের সতর্ক দৃষ্টিকে ফাঁকি দেন।

রুগ্ন শরীরে বিপুল কাশির আমদানি করে প্রথমেই এক প্রচ্ছন্ন সহানুভূতি তিনি পুলিশের কাছ থেকে পেতে সক্রিয় হন। তেলের খনির সাধারণ শ্রমিকের আড়ালে বহু বিদেশি উপাধির অধিকারী মানুষটির দীন বেশও তাঁকে সহজেই সন্দেহ মুক্ত হতে সাহায্য করে৷ মাথায় ব্যবহার করা কটকটে নেবুর তেলের গন্ধে অতিষ্ট, হয়ে পুলিশ কর্মী জগদীশবাবু বলেছিলেন, ‘নেবুর তেলের গন্ধে গোটা থানা শুদ্ধ লোকের মাথা ধরিয়ে দিলে!’

উপস্থিত বুদ্ধির প্রাখর্য তার মধ্যে ছিল। দেহতল্লাশি করে যা পাওয়া যায় বিশেষত লোহার কম্পাস, ফুটরুল, বিড়ি, দেশলাই, গাঁজার কলকে, তাতে করে তাকে কখনোই উচ্চ শিক্ষিত সব্যসাচী মল্লিক ভাবা যায় না। তাই অপূর্ব, দারোগা নিমাইবাবুকে বলেছিলেন, ‘যাকে খুঁজছেন তাঁর কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি আমাদের স্বল্প পরিসর কাহিনীতে গিরিশ মহাপাত্রের আঁড়ালে সব্যসাচী চরিত্র যে ভাবে চিত্রিত হয়েছে তা যথেষ্টই বাস্তব সম্মত।


Leave a Comment