সর্বনাম পদ
সর্বনাম পদ :- বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার করা হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে।
উদাহরণ :- আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, আপনি, তিনি , তুই , সে, সব, ইনি, উনি, যে, কে, কী, কারা ইত্যাদি।
সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ :– ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য রেখে সর্বনাম পদকে মোট আটটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। – (ক) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম (খ) নির্দেশক সর্বনাম (গ) অনির্দেশক সর্বনাম (ঘ) প্রশ্নবাচক সর্বনাম (ঙ) সাপেক্ষ সর্বনাম বা নিত্যসম্বন্ধী সর্বনাম (চ) আত্মবাচক সর্বনাম (ছ) সাকল্যবাচক সর্বনাম (জ) পারস্পরিক সর্বনাম ।
(ক) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম :- ব্যক্তিনামের পরিবর্তে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বলে। একে পুরুষবাচক সর্বনামও বলা হয়।
উদাহরণ :– আমি, আমরা, আমাকে ,আমাদের, তুমি, তোমরা, তোমাকে, তাঁকে, তুই, তোকে, আপনি, আপনাকে, সে, তারা, তিনি, তার ইত্যাদি।
(খ) নির্দেশক সর্বনাম :- যে সব সর্বনাম নিকটবর্তী বা দূরবর্তী কোনো ব্যক্তি, বস্তু ইত্যাদিকে নির্দেশ করে তাদের নির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– এ , ইহা , ও, উহা , এই , ওই ইত্যাদি।
নির্দেশক সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ :- নির্দেশক সর্বনাম আবার দুই প্রকার – ১. সামীপ্যবাচক বা নিকট নির্দেশক ২. দূরত্ববাচক নির্দেশক।
১. সামীপ্যবাচক বা নিকট নির্দেশক :– যে নির্দেশক সর্বনামগুলি কাছের জিনিসকে নির্দেশ করে তাদের সামীপ্যবাচক নির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– এই, এ, এরা, ইহা, ইনি, এটা ইত্যাদি।
২. দূরত্ববাচক নির্দেশক :– যে নির্দেশক সর্বনামগুলি দূরের জিনিসকে নির্দেশ করে তাদের দূরত্ববাচক নির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– ও, ওরা, ওই, উনি, ওটা, ওগুলি ইত্যাদি।
(গ) অনির্দেশক সর্বনাম :- যে সর্বনাম পদে কোনো বস্তু, ব্যক্তি বা ভাবকে নির্দিষ্ট করে বোঝায় না, তাকে অনির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– কেউ , কিছু, কোনো, যে-কেউ , যা-কিছু , কিছু-কিছু, কোনো-কিছু, কেউ-কেউ ইত্যাদি।
(ঘ) প্রশ্নবাচক সর্বনাম :- যে সর্বনাম পদের দ্বারা কোনো কিছু সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়, তাকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– কে , কী, কোন, কোনটা, কারা, কোনগুলি , কোথায় ইত্যাদি।
(ঙ) সাপেক্ষ সর্বনাম বা নিত্যসম্বন্ধী সর্বনাম :– সর্বনামের যে জোড়াগুলির একটি ব্যবহৃত হলে অপরটিও ব্যবহৃত হয়, তাদের সাপেক্ষ সর্বনাম বা নিত্যসম্বন্ধী সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– যা-তা, যে-সে, যিনি-তিনি, যাহা-তাহা, যারা-তারা ইত্যাদি।
(চ) আত্মবাচক সর্বনাম :– যে সর্বনামগুলি বিশেষ ভাবে কোনো ব্যক্তির নিজেকেই বা আত্মভাবকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়, তাদের আত্মবাচক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– স্বয়ং , নিজে , নিজ , খোদ , নিজে-নিজে , ইত্যাদি।
(ছ) সাকল্যবাচক সর্বনাম :– যে সর্বনামের দ্বারা কোনো সমষ্টির সকলকে বোঝানো হয়, তাকে সাকল্যবাচক বা সমষ্টিবাচক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– সব, সকল, সবাই, উভয় ইত্যাদি।
(জ) পারস্পরিক সর্বনাম :– যে সর্বনাম পদ পরস্পর অর্থে অপরের সাহায্য ছাড়া স্বেচ্ছায় ব্যবহৃত হয় তাকে পারস্পরিক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ :– আপনা-আপনি, নিজে নিজে, পরস্পর ইত্যাদি।