বাচ্য
বাচ্য :- বাচ্য বলতে সাধারণত বোঝায় প্রকাশভঙ্গি বা বাচনভঙ্গির রূপভেদ অর্থাৎ রূপের পরিবর্তন । যেমন— পুলিশ চোরটিকে ধরেছে । পুলিশের দ্বারা চোরটি ধরা হয়েছে । এখানে দেখা যাচ্ছে, বক্তব্য এক কিন্তু প্রকাশভঙ্গি আলাদা । সুতরাং ব্যক্তিভেদে বাচনভঙ্গি অনুযায়ী কর্তা, কর্ম বা ক্রিয়াপদের প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়াপদের রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকেই বলে বাচ্য।
বাচ্যের সাধারণ অর্থ :– বলার যোগ্য, কথ্য, গণ্য বা অভিধেয়।
বাচ্য শব্দের প্রকৃতি প্রত্যয় :– বচ্+য।
বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ :– বাচ্য চার প্রকার — (১) কর্তৃবাচ্য (২) কর্মবাচ্য (৩) ভাববাচ্য (৪) কর্মকর্তৃবাচ্য।
(১) কর্তৃবাচ্য :- যে বাচ্যে বাক্যের কর্তা প্রাধান্য পায় এবং কর্তা অনুগামী ক্রিয়াপদ হয়, সেই বাচ্যকে কর্তৃবাচ্য বলে । তবে মনে রাখতে হবে কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়াটি কখনো সকর্মক ক্রিয়া হয়, আবার কখনো কখনো অকর্মক ক্রিয়া হয়
যেমন — রমা গান গায় । মোনা বই পড়ে ।
(২) কর্মবাচ্য :- যে বাচ্যে বাক্যের কর্মপদটি কর্তৃপদে পরিণত হয়ে প্রাধান্য পায় এবং ক্রিয়া, কর্মের অনুগামী হয় তাকে কর্মবাচ্য বলে ।
যেমন — পুলিশ কর্তৃক চোরটি ধৃত হল । মীরার দ্বারা গানটা গাওয়া হল ।
(৩) ভাববাচ্য :- যে বাচ্যে বাক্যের ক্রিয়াপদটিই প্রধান হয় অর্থাৎ ক্রিয়ার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়, সেই বাচ্যকে ভাববাচ্য বলে ।
যেমন — আপনার কোথা থেকে আসা হচ্ছে ? এবার যাওয়া হোক ।
(৪) কর্মকর্তৃবাচ্য :- যে বাচ্যে কর্তার উল্লেখ থাকে না, কর্ম পদটিই কর্তার মতো কাজ করে, তাকে কর্মকর্তৃবাচ্য বলে ।
যেমন — ঢাক বাজে । ঘুড়ি ওড়ে । পাতা নড়ে ইত্যাদি ।