পদ প্রকরণ পদ কাকে বলে, কয় প্রকার ও কি কি?
পদ প্রকরণ | পদ নিয়ে আলোচনা |
পদ | বিভক্তিযুক্ত অর্থপূর্ণ শব্দ |
পদ কয় প্রকার | ৫ |
প্রকারভেদ | বিশেষ্য পদ, বিশেষণ পদ, সর্বনাম পদ, অব্যয় পদ ও ক্রিয়াপদ |
পদ প্রকরণ পদ কাকে বলে, কয় প্রকার ও কি কি?
পদ কাকে বলে?
পদ :- বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত অর্থপূর্ণ শব্দকে পদ বলা হয়। বিভক্তিযুক্ত শব্দ যখন বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন সেটি পদ। বাক্যে ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে সেটিকে শব্দ না বলে পদ বলাই ভালো।
যেমন – আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি। এই বাক্যে চারটি শব্দ আছে – ‘আমি’ ‘নবম’ ‘শ্রেণি’ এবং ‘পড়ি’। এই বাক্যে পদও আছে চারটি – আমি, নবম, শ্রেণিতে, পড়ি।
পদ কয় প্রকার ও কি কি?
পদের শ্রেণিবিভাগ :- একটি বাক্যে যত রকম পদ ব্যবহৃত হয় সেই পদগুলিকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এদিক থেকে বাংলা বাক্যে পদ পাঁচ প্রকার।
পদের শ্রেণীবিভাগ :- পদ প্রধানত দুই প্রকার –
- (ক) নাম পদ
- (খ) ক্রিয়াপদ
নামপদ চার ভাগে বিভক্ত। যথা – বিশেষ্য পদ, বিশেষণ পদ, সর্বনাম পদ ও অব্যয় পদ। অর্থাৎ পদ পাঁচ প্রকার – বিশেষ্য পদ, বিশেষণ পদ, সর্বনাম পদ, অব্যয় পদ ও ক্রিয়াপদ।
নাম পদ কাকে বলে?
(ক) নাম পদ :- শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে পদ গঠিত হয় তাকে নাম পদ বলে।
উদাহরন :– আকাশে অসংখ্য তারা জ্বলজ্বল করছে। এখানে আকশ হল একটি শব্দ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘এ ‘ বিভক্তি। এর ফলে নাম পদ তৈরি হয়েছে।
ক্রিয়া পদ কাকে বলে?
(খ) ক্রিয়াপদ :-
যে পদ দ্বারা কোন কাজ করা, সম্পন্ন হওয়া ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
উদাহরন :- পড়ছে, খেলছে, কাঁদছে ইত্যাদি।
পদ কয় প্রকার ও কি কি?
পদ পাঁচ প্রকার – বিশেষ্য পদ, বিশেষণ পদ, সর্বনাম পদ, অব্যয় পদ ও ক্রিয়াপদ। নিম্নে এদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
বিশেষ্য পদ
বিশেষ্য পদ কোনো কিছুর নামকে নির্দেশ করে।
যেমন – রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি। এখানে রবীন্দ্রনাথ বিশেষ্য পদ। কারণ, এই শব্দটি দ্বারা কারো নাম বোঝানো হয়েছে। যে পদ কোনো বস্তু, ব্যক্তি, গুণ, জাতি বা ক্রিয়ার নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষণ পদ :-
বিশেষণ পদ অন্য পদগুলির আগে বসে ওই পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদিকে বোঝায়।
যেমন – জোরে দৌড়াও। এখানে দৌড়ানো ক্রিয়াপদকে নির্দেশ করছে ‘জোরে’ পদটি। এখানে ‘জোরে’ বিশেষণ পদ।
বিশেষণ পদের সংজ্ঞা :- যে পদ বিশেষ্য, (বিশেষণ), অব্যয়, সর্বনাম, ক্রিয়া ইত্যাদি পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ, সংখ্যা ইত্যাদি নির্দেশ করে তাকে বিশেষণ পদ বলে।
যেমন – অনেক, ছোটো, জটিল, অল্প, ভালো ইত্যাদি।
সর্বনাম পদ
বাক্যের মধ্যে ভাষার সৌন্দর্য রক্ষায় সর্বনামের ভূমিকা অনেকখানি। একই বিশেষ্য পদ বহুবার ব্যবহার হওয়ার ফলে বাক্যের মধ্যে ভাষার সৌন্দর্যহানি ঘটে এবং শ্রুতিকটু লাগে। কিন্তু সর্বনাম প্রয়োগের ফলে ভাষা হয়ে ওঠে শ্রুতিমধুর।
সংজ্ঞা :- বাক্যের মধ্যে কোনো নাম বা ওই জাতীয় কোনো পদের পরিবর্তে বা পূর্বে লিখিত প্রসঙ্গের পুনরুক্তি না করে যে সব পদ ব্যবহার করা হয় তাদের সর্বনাম বলে।
যেমন – আমি, তুমি, সে, ইহা, তিনি, কে, কাহারা, কেউ কেউ, কোনো কিছু প্রভৃতি।
অব্যয় পদ :-
অব্যয় – এই নামটি বিশ্লেষণ করলে আমরা বুঝতে পারি কথাটির ভিতরেই এর অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। যার ব্যয় নেই সেই হল অব্যয়। তাই পদটি বিকারহীন। সংস্কৃত আলংকারিকেরা লিখেছেন –
“সদৃশং ত্রিষু লিঙ্গেষু সর্বাসু চ বিভক্তিষু।
বচনেষু চ সর্বেষু যন্ন ব্যেতি তদব্যয়ম্।।”
সংজ্ঞা :- লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও বিভক্তি ভেদে যেসব পদের কোনো পরিবর্তন ঘটে না তাদের বলে অব্যয়।
ক্রিয়াপদ
ক্রিয়ার অর্থ কাজ করা। ক্রিয়াপদ বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি বাক্য ক্রিয়াপদ ছাড়া গঠিত হয় না। তবে বিভিন্ন বাক্যে ক্রিয়াপদ উহা অবস্থায় থাকতে পারে।
সংজ্ঞা :- যে সকল পদের দ্বারা কাজ করা বোঝায় তাই হল ক্রিয়াপদ।
বাক্যমধ্যস্থ ক্রিয়াপদের অবস্থানগত বিচারে ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় – (ক) সমাপিকা ক্রিয়া এবং (খ) অসমাপিকা ক্রিয়া।
বাক্যমধ্যস্থ অন্য পদের সঙ্গে সম্বন্ধ বিচারে ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – (ক) সকর্মক ক্রিয়া এবং (খ) অকর্মক ক্রিয়া।
Nice👍👏😊