fbpx

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের জীবনী

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের জীবনী তথা কবি পরিচিতি আলোচনা করা হল।

জন্ম ১৪ অক্টোবর ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ
পেশাপেশা সাংবাদিকতা
বিশেষ পরিচিতি সাহিত্যিক
মৃত্যু ৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ খ্রিস্টাব্দ

Table of Contents

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের জীবনী

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের জন্ম

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ অক্টোবর মুরশিদাবাদ জেলার খোশবাসপুর গ্রামে এক অভিজাত মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের পারিবারিক পরিচয়

তিনি এমন একটি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন যেখানে শিক্ষা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার একটা সুন্দর পরিবেশ ছিল। শুধু তাই নয়, আরবি, ফারসি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষার চর্চাও হত তাঁর পরিবারে। লেখকের মা আনোয়ারা বেগম ছিলেন একজন খ্যাতনামা কবি। সেকারণেই ছাত্রজীবন থেকেই সিরাজ হৃদয় দিয়ে সাহিত্যরস আস্বাদন করতে শিখেছিলেন।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের প্রথম জীবন

তিনি ছাত্রজীবনে বামপন্থী আন্দোলন ও গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।  যৌবনের শুরুতেই সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ। সেই সূত্রেই তিনি লোক নাট্যদল ‘আলকাপ’-এর সঙ্গে যুক্ত হন ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। সেই দলে তিনি বাঁশি বাজাতেন এবং লোক নাট্য ও লোক নৃত্যের প্রশিক্ষণ দিতেন। এই দলের সূত্রে তিনি গ্রামবাংলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান এবং সেইসব স্থানের সমাজ ও অর্থনীতির সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি এই কাজের সূত্রে বঙ্গদেশের মুরশিদাবাদ, মালদা, বর্ধমান, বীরভূম এমনকি কলকাতাতেও ঘুরে বেড়াতেন। তাঁর পরবর্তী জীবনের লেখালেখিতে এই অভিজ্ঞতা প্রভাব ফেলেছে।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের পেশাগত জীবন

তিনি কবিতা ও ছোটোগল্প লেখা শুরু করেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই বিখ্যাত ছোটোগল্পকার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ইতিমধ্যে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবনও শুরু করেন। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নীল ঘরের নটী’ প্রকাশিত হলে তিনি ক্রমে ঔপন্যাসিক হিসেবেও খ্যাত হন।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের সাহিত্য কীর্তি

সারা জীবন ধরে তিনি ১৫০টির মতো উপন্যাস এবং ৩০০টির মতো ছোটোগল্প লিখেছেন। দেশের প্রত্যেকটি ‘অষ্টম তফশীল’ ভুক্ত ভাষায় এবং ইংরেজিতে তাঁর বহু উপন্যাস এবং ছোটোগল্প অনুদিত হয়েছে। তাঁর বহু উপন্যাস এবং বেশ কিছু ছোটোগল্প নিয়ে চলচ্চিত্রও তৈরি হয়েছে।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ছোটো গল্প

‘ইন্তিপিসি ও ঘাটবাবু’, ‘ভালোবাসা ও ডাউন ট্রেন’, ‘হিজল বিলের রাখালেরা’, ‘তরঙ্গিনীর চোখ’, ‘মানুষের জন্ম’, ‘রণভূমি’, ‘রত্নের প্রত্যাশা’, ‘মাটি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের উপন্যাস

‘অলীক মানুষ’, ‘অমর্ত্য প্রেমকথা’, ‘নিশিমৃগয়া’, ‘কৃষ্ণা বাড়ি ফেরেনি’, ‘তৃণভূমি’, ‘কিংবদন্তির নায়ক’, ‘উত্তর জাহ্নবী’ প্রভৃতি উপন্যাস উল্লেখযোগ্য।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ডিটেকটিভ চরিত্র

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ডিটেকটিভ চরিত্র গোয়েন্দা কর্নেল -এর স্রষ্টা। এই চরিত্রটি নিয়ে তিনি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য যেসব গোয়েন্দা কাহিনি রচনা করেছেন, তা তাকে খ্যাতির তুলে নিয়ে যায়।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের পুরস্কার

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় উপন্যাস ‘অলীক মানুষ’ -এর জন্য ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বঙ্কিম পুরস্কার এবং সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। তাঁর ‘অমর্ত্য প্রেমকথা’ (১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ) উপন্যাসের জন্য তিনি পান নরসিংহ দাস স্মৃতি পুরস্কার।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের মৃত্যু

২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৪ সেপ্টেম্বর বিরাশি বছর বয়সে সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা সিরাজের মৃত্যু হয়।

উপসংহার

স্বতন্ত্র ধারার কথাসাহিত্যিক হিসেবে এবং গোয়েন্দা কর্নেল চরিত্রের স্রষ্টা হিসেবে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাস্য

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের জন্ম কোথায়?

মুর্শিদাবাদ জেলার খোশবাসপুরে

গোয়েন্দা কর্নেল চরিত্রের স্রষ্টা কে?

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ

কোন উপন্যাসের জন্য সিরাজ সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন?

অলীক মানুষ

Leave a Comment