মহাশ্বেতা দেবীর জীবনী

মহাশ্বেতা দেবীর জীবনী তথা কবি পরিচিতি আলোচনা করা হল।

জন্ম ১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ
পিতামাতা মনীশ ঘটক, ধরিত্রী দেবী
পেশা লেখক
দাম্পত্য সঙ্গী বিজন ভট্টাচার্য
সন্তান নবারুণ ভট্টাচার্য
মৃত্যু ২৮ জুলাই ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ

মহাশ্বেতা দেবীর জীবনী

বাংলা কথাসাহিত্যে প্রতিবাদী ধারার লেখিকা হলেন মহাশ্বেতা দেবী। তিনি সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন।

মহাশ্বেতা দেবীর জন্ম ও পিতৃপরিচয়

১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় জন্মগ্ৰহণ করেন। পিতা বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক মনীশ ঘটক। তিনি ‘যুবনাশ্ব’ ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন। মাতা ধরিত্রী দেবী। ভাইবোনদের মধ্যে সবার বড়ো।

মহাশ্বেতা দেবীর শিক্ষা

রাজশাহীতে মহাশ্বেতা দেবীর শিক্ষা শুরু হয়। রাজশাহিতে শিক্ষালাভের পর কলকাতায় আশুতোষ কলেজে লেখাপড়া করেন। বিশ্বভারতীতেও মহাশ্বেতা দেবী তাঁর ছাত্রীজীবন কাটিয়েছেন। তিনি ইংরেজিতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

মহাশ্বেতা দেবীর কর্মজীবন

মহাশ্বেতা দেবীর কর্মজীবন কাটে স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতা করে। ‘যুগান্তর’ পত্রিকার সঙ্গে সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ‘রং মশাল’ পত্রিকায় ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে। ‘দেশ’ পত্রিকায় তাঁর ‘পদ্মিনী’ ও ‘যশোবন্তী’ গল্প দুটি প্রকাশিত হয় ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে। ইতিহাসের পটভূমিতে তাঁর বিখ্যাত গবেষণামূলক রচনা ‘ঝাঁসির রাণী’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ এখ্রিস্টাব্দে। ‘নটী’, ‘অরণ্যের অধিকার’ ও ‘হাজার চুরাশির মা’ তাঁকে বাংলা সাহিত্যে সুপ্রতিষ্ঠিত করে।

সাহিত্য সাহিত্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে। অজস্র রচনায় বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন মহাশ্বেতা দেবী। নিপীড়িত মানুষ, অবহেলিত আদিবাসী সমাজ তাঁর সাহিত্যে গুরুত্বের অধিকারী হয়েছে। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা ‘কবি বন্দ্যঘটী গাঞ্জির জীবন ও মৃত্যু’, ‘রুদালী’, ‘সিধু কানুর ডাকে’, ‘নৈর্ঝতে মেঘ’, ‘বীরসা মুণ্ডা’, ‘স্তন্যদায়িনী ও অন্যান্য গল্প’ প্রভৃতি।

মহাশ্বেতা দেবীর সম্মান ও পুরস্কার

মহাশ্বেতা দেবী বিশাল সাহিত্য অবদানের জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। সাহিত্য আকাদেমি, জ্ঞানপীঠ ও ম্যাগসেসাই প্রভৃতি পুরস্কার এবং দেশিকোত্তম ও পদ্মশ্রী উপাধিতে সম্মানিত হয়েছেন।

মহাশ্বেতা দেবীর উপন্যাসগুলি

ঝাঁসির রাণী’ (১৯৫৬), ‘নটী’ (১৯৫৭), ‘যমুনা কী তীর’ (১৯৫৮), ‘মধুরে মধুর’ (১৯৫৮), ‘তিমির লগন’ (১৯৫৯), ‘তারার আঁধার’ (১৯৬০), ‘পরম পিপাসা’ (১৯৬১), ‘তীর্থশেষের সন্ধ্যা’ (১৯৬২), ‘দিনের পারাবারে’ (১৯৬৩), ‘আঁধার মনিক’ (১৯৬৬), ‘মধ্যরাতের গান’ (১৯৬৭), ‘হাজার চুরাশির মা’ (১৯৭৪), ‘ধানের শীষে শিশির’ (১৯৭৬), ‘অরণ্যের অধিকার’ (১৯৭৭), ‘স্বাহা’ (১৯৭৭), ‘সুভাগা বসন্ত’ (১৯৮০), ‘সিধু কানুর ডাকে’ (১৯৮১), ‘পলাতক’ (১৯৮৩), ‘আশ্রয়’ (১৯৮৫), নীল ছবি’ (১৯৮৬), ‘সত্য-অসত্য’ (১৯৮৭), ‘সতী’ (১৯৯০), ‘ক্ষুধা’ (১৯৯২), ‘আগুন জ্বলেছিল’ (১৯৯৪), ‘প্রস্থান পর্ব’ (১৯৯৫), ‘ঘোরানো সিঁড়ি (১৯৯৭), ‘যে যুদ্ধ থামল না’ (১৯৯৮) প্রভৃতি।

মহাশ্বেতা দেবীর গল্প সংকলন

‘সপ্তপর্ণী’ (১৯৬০), ‘অনবরত অবিশ্বাস্য’ (১৯৭২), ‘অগ্নিগর্ভ’ (১৯৮০), নৈর্ঝতে মেঘ’ (১৯৮০), ‘বেহুলা’ (১৯৮১), ‘মায়ের মূর্তি’ (১৯৮২), ‘স্তন্যদায়িনী ও অন্যান্য গল্প’ (১৯৮২), ‘পাঁকাল’ (১৯৮৩), ‘গ্রাম বাংলা’ (১৯৮৬), ‘ইটের পরে হট’ (১৯৮৭), ‘প্রথম পাঠ’ (১৯৮৮), ‘ঘাতক’ (১৯৮৯), ‘স্বনির্বাচিত শ্রেষ্ঠ গল্প’ (১৯৯০), ‘তালাক ও অন্যান্য গল্প’ (১৯৯২), ‘মুখ’ (১৯৯৩), ‘স্বনির্বাচিত গল্প’ (১৯৯৩), ‘কৃষ্ণাদ্বাদশী’ (১৯৯৪), ‘মহাশ্বেতা দেবীর পঞ্চাশটি গল্প’ (১৯৯৬) প্রভৃতি।

মহাশ্বেতা দেবীর কিশোর সাহিত্য

‘এককড়ির সাধ’ (১৯৬৮), ‘পথ চলি আনন্দে’ (১৯৭৯), ‘পাথরের সিংহ’ (১৯৭৯), ‘বীরসা মুণ্ডা’ (১৯৮১), ‘বাঘা শিকারী’ (১৯৮৬), ‘মনেশ্বর’ (১৯৮৭), ‘এতোয়া মুন্ডার যুদ্ধ’ (১৯৯০), ‘তুতুল’ (১৯৯৪) প্রভৃতি।

 মহাশ্বেতা দেবীর মৃত্যু

২৮ জুলাই ২০১৬ সালে মহাশ্বেতা দেবী পরলোকগমন করেন।

উপসংহার

শেষ জীবন পর্যন্ত মহাশ্বেতা দেবীর কথাবার্তা ও ভাষণ ছিল তীক্ষ্ণ ও বৈপ্লবিক। তিনি সর্বদাই স্পষ্টবক্তা ও প্রতিবাদী ছিলেন।

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাস্য

মহাশ্বেতা দেবীর জন্ম কোথায়?

বাংলাদেশের ঢাকা

মহাশ্বেতা দেবী কাকে বিয়ে করেন?

বিজন ভট্টাচার্য

কোন সাহিত্যিক আদিবাসীদের হয়ে আজীবন লড়াই করেন?

মহাশ্বেতা দেবী

মহাশ্বেতা দেবীর প্রথম উপন্যাস কোনটি?

‘ঝাঁসির রানি’

মহাশ্বেতা দেবীর বিখ্যাত উপন্যাস কোনটি?

‘হাজার চুরাশির মা’

Leave a Comment