বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো একাদশ শ্রেণী বাংলা সাহিত্য চর্চার আন্তর্জাতিক গল্প। বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়োর রচয়িতা হলেন গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ। বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর নিম্নে দেওয়া হল। Bengali Class xi / Eleven Bishal Danawala Thurthure Budo Question Answer. আন্তর্জাতিক গল্প বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো হতে 5 নং প্রশ্ন ও উত্তরগুলি দেওয়া হল।
বিষয় | বাংলা |
শ্রেণী | একাদশ শ্রেণী বাংলার আন্তর্জাতিক গল্প |
গল্প | বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো |
রচনা | গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ |
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো – গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে প্রশ্ন-১: “পড়ে থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে তারা কেমন হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল।” – কারা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল? ‘পড়ে থাকা শরীরটার’ বিবরণ তোমার নিজের ভাষায় লেখ। ২+৩ (২০১৪, ২০১৮)
গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ রচিত ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনুবাদিত ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পে পেলাইও আর এলিসেন্দা চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল।
কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা থুরথুরে বুড়াের দিকে তাকিয়ে পেলাইও আর এলিসেন্দা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। বুড়োর পরনে ছিল ন্যাকড়াকুড়ুনির পােশাক। তার টাক-পড়া চকচকে মাথায় বিবর্ণ কয়েকটি চুল মাত্র অবশিষ্ট ছিল আর ফোকলা মুখে দাঁত খুবই কম। কখনও যদি তার চেহারায় জাঁকজমক থেকেও থাকে বর্তমানের করুণ দশায় সেই চমক উধাও হয়ে গেছে। বুড়োর পিঠে আছে অতিকায় শিকারি পাখির ডানা, যার অর্ধেকটাই পালক-খসা ও নােংরা। কাদায় তার ডানা জট পাকিয়ে গেছে।
পেলাইও আর এলিসেন্দা তাদের বিস্ময়ের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে এই থুরথুরে বুড়োর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তীক্ষ্ণ এক দুর্বোধ্য বুলিতে সে তার জবাব দিয়েছিল। বুড়োর এই অবাস্তব অসম্ভব এবং একই সঙ্গে জরাজীর্ণ চেহারাকে পেলাইও ও এলিসেন্দা প্রত্যক্ষ করেছিল।
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে প্রশ্ন-২। “এলিসেন্দা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললে” – এলিসেন্দা কি দেখেছিল? এলিসেন্দা কেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল? সে কেমন ভাবে উড়ে যাচ্ছিল? এলিসেন্দা কেন তাকিয়ে তাকে দেখতে থাকে? ১+১+১+২ (২০১৫, ২০২৩)
গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ রচিত ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনুবাদিত ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পে এলিসেন্দা দেখেছিল যে, ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াে তার বিশাল ডানা মেলে শেষ বাড়িগুলাের ওপর দিয়ে কোনােক্রমে উড়ে যাচ্ছে।
থুরথুরে বুড়োর উড়ে মাওয়ায় এলিসেন্দা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল। কারণ, ডানাওয়ালা বুড়াে এলিসেন্দা ও পেলাইওর জীবনে যেভাবে ক্রমশ উপদ্রব হয়ে উঠছিল, তা থেকে তাদের মুক্তি ঘটেছিল। আবার অন্যদিকে ডানাওয়ালা বুড়ােরও এই অবাঞ্ছিত জীবন থেকে মুক্তি ঘটেছিল।
কোনাে মতিচ্ছন্ন জরাগ্রস্ত শকুনের ঝুঁকিতে ভরা ডানাঝাপটানি দিয়ে থুরথুরে বুড়ো উড়ে যাচ্ছিল।
এলিসেন্দা বুড়োর উড়ে যাওয়া তাকিয়ে দেখতে থাকে। কারণ, সে ডানাওয়ালা বুড়ােকে দেখেছিল জরাগ্রস্ত অবস্থায়, কোনাে বিষয়েই তার কোনাে উৎসাহ ছিল না। এরকম অবস্থায় সে প্রথম ডানা ছড়িয়ে উড়বার চেষ্টা করে, অগােছালাে এবং অনভ্যস্ত সেই চেষ্টায় নখ দিয়ে মাটি আঁচড়ায়, তারপর ডানা ছড়িয়ে উড়ে যায়। থুরথুরে বুড়োর এই পরিবর্তন এলিসেন্দার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নেয়।
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে প্রশ্ন-৩: ” সকাল সাতটার আগেই পাদ্রে গোনাসাগা এসে হাজির” – পাদ্রে গোনাসাগা কে? তিনি কেন এসেছিলেন? ‘বন্দীর ভবিষ্যৎ নিয়ে’ জড়ো হওয়া দর্শকরা কি ভেবেছিল? ১+১+৩ (২০১৬)
কথাসাহিত্যিক গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ রচিত ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনুবাদিত ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো’ গল্পে পাদ্রে গোনসাগা হলেন একজন পাদ্রী তথা ধর্মযাজক। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন কাঠুরে।
এলিসেন্দা পেলাইওর বাড়িতে বন্দী থাকা ডানাওয়ালা বুড়োকে সকলে দেবদূত ভাবতে থাকে। এই খবর পাদ্রে গোনসাগার কানে পৌঁছলে তিনি বন্দীর প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে সকাল সাতটার আগেই পেলাইওদের বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন।
খাঁচায় বন্দী দেবদূতরূপী ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়োকে দেখতে আসা দর্শকেরা বন্দীর ভবিষ্যৎ নিয়ে নানারকম জল্পনা শুরু করে দেয়। উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে সবচেয়ে সরল হৃদয়ের মানুষটি ভেবে ফেলেছিল যে ডানাওয়ালা বুড়োকে ‘সারা জগতের পুরপিতা’ নাম দেওয়া উচিত। অপেক্ষাকৃত কঠিন হৃদয়ের দর্শকদের মনে হয়েছিল এই থুরথুরে বুড়োকে পাঁচতারা সেনাপতির পদে উন্নীত করা উচিত। তাহলে সে অতি সহজেই সমস্ত যুদ্ধ জিতিয়ে দিতে পারবে।
উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে দূরদর্শী লোকেদের মনে হয় এই থুরথুরে বুড়োকে দিয়ে পৃথিবীতে কোনো ডানাওয়ালা জাতির জন্ম দেওয়া গেলে, সে জাতি জ্ঞানেগুণে সর্বশ্রেষ্ঠ হবে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত দায়িত্ব নেবে। শেষ পর্যন্ত বন্দীর ভবিষ্যৎ নিয়ে দর্শকদের যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে পাদ্রে গোনসাগা জানিয়ে দেন এই ডানাওয়ালা বুড়ো মোটেই দেবদূত নয়, আসলে সে একজন জোচ্চোর-ফেরেব্বাজ।
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে প্রশ্ন-৪: “বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ করার কোনই কারণ ছিল না।” – বাড়ির মালিকদের নাম কি ? তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন? ১+৪ (২০১৭, ২০২০)
গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ রচিত ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনুবাদিত ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পের আলোচ্য অংশে বাড়ির মালিকরা হল এলিসেন্দা ও পেলাইও।
আলোচ্য গল্পে মাকড়সায় রূপান্তরিত হওয়া মেয়েটি একটি ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী হিসেবে শহরে আসার পর ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ােকে নিয়ে মানুষের কৌতূহল কমে যায়। এরপর পেলাইও আর এলিসেন্দাদের উঠোনে থুরথুরে বুড়োকে দর্শনি দিয়ে দেখার জন্য মানুষের যে সারি দিগন্ত ছুঁয়েছিল, তা সম্পূর্ণ ফাঁকা হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে পেলাইও আর এলিসেন্দা অবশ্য একটুও চিন্তিত বা দুঃখিত হয় নি। কারণ, এর মধ্যেই থুরথুরে ডানাওয়ালা বুড়ােকে দেখিয়ে তারা প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিল। সেই অর্থ দিয়ে তারা উঁচু তারের জাল দিয়ে ঘেরা অলিন্দ আর বাগান সমৃদ্ধ চকমেলানাে দোতলা বাড়ি বানিয়ে ফেলেছিল। পেলাইও সাধ্যপালের কাজে ছেড়ে দিয়ে শহরের কাছেই খরগােশ পালনের ক্ষেত্র বানিয়ে নিয়েছিল। অন্যদিকে এলিসেন্দা অনেকগুলাে উঁচুখুরওয়ালা জুতাে আর রামধনু রঙের রেশমের বাহারি পােশাক তৈরি করে নিয়েছিল, মে সব পোশাক তখনকার দিনে কেবল অভিজাত ও কাঙ্ক্ষিত মহিলারাই প্রতি রবিবারে পরত।
খুব স্বাভাবিকভাবেই হাতে প্রচুর অর্থ আসায় ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াে ক্রমশ তাদের মনােযােগ হারিয়ে ফেলেছিল। আর সেই কারণেই খাঁচার ভিড় কমে যাওয়াতেও তারা কোনাে বিলাপ করে নি।
বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়ো আন্তর্জাতিক গল্প হতে প্রশ্ন-৫: দেবদূতের আবির্ভাবে পেলায়ও আর এলিসেন্দার দারিদ্র্য কিভাবে দূর হলো ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো’ গল্প অবলম্বনে লেখো। ৫ (২০১৯)
কথাসাহিত্যিক গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ রচিত ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনুবাদিত ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো’ গল্পে এলিসেন্দা ও পেলাইওর বাড়িতে এক ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়োর আগমন ঘটে। এরপর চারিদিকে রটে যায় এই থুরথুরে বুড়ো আসলে একজন দেবদূত। এর ফলে বাড়ির উঠোনে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়।
মানুষের এত ভিড় দেখে চতুর এলিসেন্দার মাথায় বুদ্ধি খেলে যায়। উঠোনের চারিদিকে বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখে তারা দেবদূতের দর্শনি বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচ সেন্ট করে আদায় করতে শুরু করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই দেবদূতের প্রতি মানুষের মোহ এবং বিশ্বাস কমতে থাকে এবং পেলাইওদের উঠোন ক্রমশ ফাঁকা হয়ে যায়। এরপর উপার্জন বন্ধ হয়ে গেলেও, দেবদূতের দর্শনি বাবদ ইতিমধ্যেই তারা প্রচুর অর্থ লাভ করেছিল, যা ছিল তাদের প্রয়োজনের থেকেও বেশি।
হাতে প্রচুর কাঁচা টাকা পেয়েই পেলাইও তার সাধ্যপালের কাজ ছেড়ে দিয়েছিল। শহরের কাছেই খরগোশ পালন করার একটি জায়গা সে বানিয়ে নিয়েছিল। অর্জিত অর্থ দিয়ে তারা অলিন্দ আর বাগান দিয়ে ঘেরা একটি চকমেলানো দোতালা বাড়ি তৈরি করেছিল।
অর্জিত অর্থ দিয়ে এলিসেন্দা অনেকগুলো উঁচু ক্ষুরওয়ালা জুতো আর প্রচুর রেশমি কাপড়ের পোশাক কিনে নিয়েছিল। তাদের কাছে দেবদূত তথা থুরথুরে বুড়ো যেন প্রকৃত অর্থেই ছিল ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’। এই থুরথুরে বুড়োর প্রদর্শনী দেখিয়ে বাড়ির মালিকেরা প্রথমেই এত পরিমাণ অর্থ কামাই করে নিয়েছিল, যা ছিল তাদের কাছে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এই ভাবেই এলিসেন্দা ও পেলাইওর জীবনে দারিদ্র্য দূরীভূত হয়েছিল।
Thanks
Thanks