দ্বীপান্তরের বন্দিনী: একাদশ শ্রেণী বাংলা কবিতা

দ্বীপান্তরের বন্দিনী একাদশ শ্রেণী বাংলা সাহিত্য চর্চার কবিতা। দ্বীপান্তরের বন্দিনীর রচয়িতা হলেন কাজী নজরুল ইসলাম। দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতা হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর নিম্নে দেওয়া হল। Bengali Class xi / Eleven  DWIPANTORER BANDINI Question Answer. কবিতা দ্বীপান্তরের বন্দিনী হতে 5 নং প্রশ্ন ও উত্তরগুলি দেওয়া হল।

বিষয়বাংলা
শ্রেণীএকাদশ শ্রেণী বাংলা কবিতা
গল্পদ্বীপান্তরের বন্দিনী
রচনাকাজী নজরুল ইসলাম
দ্বীপান্তরের বন্দিনী

Table of Contents

দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতা হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর

দ্বীপান্তরের বন্দিনী – কাজী নজরুল ইসলাম


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ১: “জীবন চুয়ানো সেই ঘানি হতে  আরতির তেল এনেছ কি?” – রূপকার্থটি বুঝিয়ে দাও। ৫  (২০১৪)

কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতা থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

কলুরা কাঠের ঘানিতে তিল, সরষে প্রভৃতি পেষাই করে তেল নিষ্কাশন করে। এই ঘানির কাঠের দণ্ড ঘােরানাে হত গােরু দিয়ে। কিন্তু আন্দামানের সশ্রম দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের দিয়ে ঘানির কাষ্ঠদণ্ড ঘােরানাে হত। দ্বীপান্তরিত কয়েদিদের দিয়ে পশুতুল্য অমানবিক পরিশ্রম করানাে হত। এখানে তৈলবীজ পেষাইয়ের সেই ‘ঘানি’-র কথা বলা হয়েছে। 

ঘানি টানা কঠোর শ্রমের ফলে তেলই কেবল নিষ্কাশিত হত না, কয়েদিদের জীবন-নিংড়ানাে ঘাম ও রক্ত ঝরে পড়ত। এই দুর্বিষহ শ্রম ও পীড়ন ছিল বড়ােই মর্মন্তুদ। কয়েদির সমস্ত শক্তি নিংড়ে নিয়ে যেন আখের ছিবড়েতে পরিণত করা হত। এই কারণে কবি ‘জীবন-চুয়ানাে’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।

‘আরতির তেল’ রূপকার্থের মাধ্যমে এখানে বাকদেবীর শূন্য বেদিতে বাণী অর্চনার যে আয়ােজন হয়েছে তা যেমন ব্যর্থ প্রয়াস, তেমনি পুজো আয়ােজনের অঙ্গ হিসেবে মায়ের আরতির ব্যবস্থাও আর এক নিষ্ফলতার দৃষ্টান্ত। পুরােহিতের এই সব অর্থহীন শৌখিন বিলাসে কবি ব্যথিত হয়েছেন। কারণ, মায়ের সন্তানেরা ঘানি টানার কঠিন পরিশ্রমে, নিষ্ঠুর পীড়ন ও পেষণে জীবনের রস-রক্ত-চর্বি নিষ্কাশিত করে মৃতপ্রায়। মায়ের মুক্তি বা স্বাধীনতার জন্যই তাে তাঁদের এই ত্যাগ-তিতিক্ষা, জীবন উৎসর্গ।


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ২: “দ্বীপান্তরের ঘানিতে লেগেছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক।” – ‘দ্বীপান্তরের ঘূর্ণিপাক’ কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৫ (২০১৫) 

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতাটি রচনা করেন। কবি দ্বীপান্তরের বন্দিনী বাকভারতীর রূপকে বন্দি স্বাধীনতা যোদ্ধাদের অত্যাচারিত জীবনের ছবি তুলে ধরেছেন। বিদেশি সরকারের খুনখারাপি, শােষণ-শাসন, নিপীড়ন, অন্যায়-অবিচারের চিত্রাঙ্কনের মধ্যে হতাশা থাকলেও কবি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে আশাবাদী। নতুন যুগের স্বপ্ন ছিল তাঁর দুই চোখে। 

কবি দেবী সরস্বতীর পূজারির কাছে জানতে চেয়েছেন-তিনি মায়ের চরণে অঞ্জলি দিচ্ছেন, কিন্তু ভারতমাতা তো পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত নয়। আইন-ই ন্যায়ের শাসক হয়ে সত্যবাদীদের বন্দি করে চলেছে। তারা অত্যাচারিত হচ্ছেন, কিন্তু অত্যাচারের কথা বলতে পারছেন না। দেশমাতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে স্বদেশি ভাইগণ ‘বিদ্রোহী’ আখ্যা নিয়ে বন্দি হচ্ছে। 

কবি আশাবাদী, তাই তিনি যুগপরিবর্তনে নতুন কোনো বিপ্লবের সূচনার ইঙ্গিত পাচ্ছেন। দেবীর বীণার তারে সুর বেজে উঠছে। বিধিও আজ ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। কবির আশা, মঙ্গলশঙ্খ বাজুক, প্রাণে প্রাণে জাগ্ৰত হোক প্রেরণা। কবি যেন ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার বিজয় শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। নতুন যুগের সূচনার ইঙ্গিত পাচ্ছেন। কবি আলোচ্য পংক্তি তথা কবিতায় সেই আশার বাণীই শুনিয়েছেন।


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ৩: ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কে? ‘বন্দিনী’কে মুক্ত করার জন্য কবির যে আকুলতা প্রকাশিত হয়েছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখ। ১+৪ (২০১৬, ২০১৯) 

কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় দ্বীপান্তরের বন্দিনী হলেন ভারত-ভারতী বা ভারতমাতারূপী বাকদেবী সরস্বতী। তিনি আন্দামানে দ্বীপান্তরিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতীক। 

বন্দিনী ভারত-ভারতীর মুক্তির জন্য কবি নজরুলের ব্যথিত হৃদয়ের ব্যাকুলতার শেষ নেই। কবিতার ছত্রে ছত্রে তাঁর দরদি চিত্তের আকুলতা প্রকাশিত। ভারত-ভারতী দ্বীপান্তরে দেড়শাে বছর বন্দিনী। তাঁর শূন্য বেদিতে ক্রন্দনধ্বনি উঠছে। অস্ত্রধারীর অস্ত্রের আঘাতে তার পদ্ম শতচ্ছিন্ন। এই সব অন্যায়-অত্যাচার আর অবিচারের ঘটনায় কবি-হৃদয় বেদনাহত। 

কবি মায়ের মুক্তির জন্য সতত ব্যাকুল। তাঁর ব্যাকুলতা সীমা ছাড়িয়ে যায়, যখন তিনি শুনেছেন দ্বীপান্তরে বাকভারতী ঘানি টানছেন। সেই ঘানি থেকে জীবন-চুয়ানাে তেলে হােমানল জ্বলছে। সেখানে অত্যাচারিত হয়েও অত্যাচারের কথা বলার উপায় নেই। এখানে সত্যভাষীকে অন্যায়-অত্যাচারের মার খেতে হয়। আর সত্যভাষণের স্বাধীনতাকে বিদ্রোহী আখ্যা দেওয়া হয়। 

কবির কথায় অত্যাচারী শাসক রাজ্যপাট হারানাের ভয়ে স্বাধীনতাকামী বীরসিংহকে খাঁচাবন্দি করে রেখেছে। ব্যাঘ্রবিক্রম স্বাধীনতা সংগ্রামের যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে অগ্নি-শেল হানা হয়েছে, বীণা হয়েছে গুলিবিদ্ধ, আর বাণীর কমল জেল খাটছে। অবশ্য কবিমনের এটুকু আশা যে, মায়ের মুক্তির পূর্বাভাস সূচিত হয়েছে। কারণ, যুগান্তরের ধর্মরাজ বাণীর কমলে চরণ রেখেছেন। দ্বীপান্তরের ঘানিতে লেগেছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক। 


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ৪: ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবির স্বদেশপ্রেম কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে আলোচনা কর। ৫ (২০১৭, ২০২০)

কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বাধীনচেতা মানুষ। তাঁর লেখার বিষয় সমকালের সমাজ ও মানুষজন। আলোচ্য ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবি দেশমাতার পরাধীন দশা লক্ষ্য করেছেন। তাই তাঁকে মুক্ত করাই প্রথম কর্তব্য। কবির মতে আবেদন নিবেদন নয়, সশস্ত্র সংগ্রামই পারে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ রাজশক্তিকে ভারতের বুক থেকে উৎখাত করতে। কবি লক্ষ্য করেছেন, দেশমাতৃকার সন্তানেরা বৃথাই মায়ের আরতি করছে, মায়ের পুণ্যবেদী আজ শূন্য। কারণ, ‘ভারত ভারতী’ দ্বীপান্তরে বন্দিনী দশা কাটাচ্ছে।

কবি দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন ‘ভারত-ভারতী’ তথা দেবী সরস্বতী দেড়শো বছর বন্দিনী হয়ে আছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর ওপর চলছে দমন-পীড়ন ও নির্মম অত্যাচার। দেশমাতৃকার সাথে মাতৃভক্ত সন্তানদেরও নির্মম আক্রমণ সহ্য করতে হয়। স্বদেশভূমি যক্ষপুরীতে পরিণত হয়েছে। দেশে কোনো বীরসন্তান সত্য কথা বললেই তার ওপর নেমে আসে সাম্রাজ্যবাদী শাসকের কু-দৃষ্টি, তার ভাগ্যে জোটে কারাগারের বন্দিত্ব দশা।

দেশকে ভালোবাসা কবির ক্ষেত্রেও হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যায়। ‘বাণী’ মুক্তির কথা উচ্চারণ ও গ্রন্থে প্রকাশ করায় কবিকে পড়তে হয়েছে রাজরোষে, পেতে হয়েছে ‘বিদ্রোহী’ আখ্যা, যেতে হয়েছে কারাগারে। যে কোনো স্বাধীনতা সংগ্রামীরই একমাত্র প্রাপ্তি বেয়োনেটের গুঁতো, বন্দুকের গুলি। দেশপ্রেমিক কবি দুঃখের সঙ্গে দেখেছেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের নায়ক চরিত্র মাস্টারদা সূর্যসেনের সহযোগী বীণা রায়ের অকাল মৃত্যু – 

“কে জানিত কাল বীণা খাবে গুলি

 বাণীর কমল খাটিবে জেল!” 

কবি কিন্তু আশাবাদী। তিনি জানেন যে, ব্রিটিশ সরকার বেশি দিন দমন-পীড়ন চালিয়ে যেতে পারবে না। কারণ, মুক্তির বাণী সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে, ‘ভারত-ভারতীর’ মুক্তি ঘটবে –

“তবে কি বিধির বেতার-মন্ত্র

বেজেছে বাণীর সেতারে আজ,

পদ্মে রেখেছে চরণ-পদ্ম যুগান্তরের ধর্মরাজ?”

এভাবেই কবির স্বদেশ প্রেম সমগ্র কবিতাটিতে ছড়িয়ে আছে।


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ৫: ‘ধ্বংস হল কি রক্ষ-পুর?’ – রক্ষ-পুর বলতে কি বুঝিয়েছেন? কীভাবে তা ধ্বংস হবে? ১+৪ (২০১৮)

স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত ‘ফণীমনসা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘রক্ষপুর’ বলতে অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।

পরাধীন ভারতের বিপ্লবীদের ব্রিটিশরা আন্দামানে বন্দি করে রাখত। এছাড়াও নানাভাবে চলত ব্রিটিশদের কঠোর দমন পীড়ন। এইভাবে তারা ভারতমাতাকে শিকলের বাঁধনে বন্দি করে রেখেছিল। কিন্তু কবি নিশ্চিত জানেন, আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ কিছুতেই ব্যর্থ হওয়ার নয়। ইতিহাসের অনিবার্যতার সূত্র ধরে কবি স্থির বিশ্বাসে বলে ওঠেন যে, পাপ-পুণ্যের বিচারকর্তা যুগান্তরের ধর্মরাজের চরণ-পদ্ম বর্তমানে কেবল ‘পদ্মে’র ওপর রাখার অপেক্ষা।

যে দ্বীপান্তর স্বাধীনতার স্বপ্নকে নির্বাসিত করেছিল, সেই খানেই কবি লক্ষ্য করেছেন ‘যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক’-এর সম্ভাবনা। যার প্রবলতাকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না, নিশ্চিতরূপে যা ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করতে সক্ষম হবেই বলে কবির বিশ্বাস


দ্বীপান্তরের বন্দিনী প্রশ্ন- ৬: ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় বিদ্রোহী কবির দেশপ্রেম ও বিদ্রোহীসত্তার বহিঃপ্রকাশ কীভাবে ঘটেছে নিজের ভাষায় লেখো। ৫ (২০২৩)

কবি কাজী নজবুল ইসলাম দেশপ্রেমে উদ্‌বুদ্ধ চিত্ত এক বীর যোদ্ধা। বিদেশি শাসক ইংরেজদের নির্মম অত্যাচার, নিপীড়ন নেমে এসেছিল ভারতমাতার বুকে, তাঁর বীরসন্তানদের ওপর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ যোদ্ধা কবি কাজী নজরুল ইসলাম মনে প্রাণে স্বদেশি। একজন বীর সৈনিক বলেই তিনি বলতে পারেন, “আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাত্রীর!”

কবি দেখেছেন নিষ্ঠুর শাসক ইংরেজ ভারত মায়ের বীর সন্তানদের সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলে বন্দি করে রেখেছে। সেখানে অতন্দ্র প্রহরায় শস্ত্র পাণির অস্ত্রাঘাতে তাদের জর্জরিত করা হয়েছে। কবি সেই বাস্তব ঘটনার কথা চিন্তা করে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। যে সমস্ত বীর সন্তান শুধু দেশমাতা ভারত-ভারতী দেবী সরস্বতীর পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন করতে গিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, নিষ্ঠুর-নির্মম শাসক ইংরেজ তাদের রেহাই দেয় নি। ন্যায়েরই শাসক হয়ে সত্যবাদী, তরতাজা সবুজ মন ও বীরত্বের অধিকারী স্বদেশিদের বন্দি করে সুদূর আন্দামানে কারারুদ্ধ করে রেখেছিল। অন্যায়ভাবে তাদের বন্দি করে রাখার চরম প্রতিবাদ করেছেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

কবিগণ চিরদিন সত্যসাধক। তাদের চিন্তন-মনন মানুষকে কেন্দ্র করে ও মানুষের মঙ্গলের জন্যই। কবি কাজি নজরুলও সেই একই পথের পথিক। তিনি চান দ্বীপান্তরের বন্দিনি দেবী সরস্বতী দেশমাতা স্বাধীন হোক, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করুক তাঁর সন্তানগণ। ধর্মের রক্ষক পূজারিরাও মানুষের কথা ভাবুক, মানুষের মঙ্গলের জন্য মঙ্গলশঙ্খ বাজাক। ধর্মের মুখোশ ছেড়ে প্রকৃত ধর্মপ্রচারক হোন। মানুষ স্বাধীনতার গান গেয়ে উঠুক, ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হোক।

Leave a Comment