একাদশ শ্রেণীর মধ্যযুগে বাংলার সমাজ ও সাহিত্য হতে ইসলামীয় ধারা সমস্থ ছোট বড় ও MCQ প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হল
ইসলামীয় ধারা
১। চট্টগ্রাম এবং আরাকান রোসাঙ অঞ্চল ছিল পরস্পরের –
(ক) নিকটবর্তী
(খ) দূরবর্তী
(গ) অধিক দূরবর্তী
(ঘ) কোনোটাই নয়
ক
২। পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের মুসলিম শাসকগণ কোন্ আদর্শসম্মত কাব্যরচনার পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন?
(ক) মুসলমান
(খ) খ্রিস্টান
(গ) হিন্দু
(ঘ) কোনোটাই নয়
গ
৩। মুসলমান কবি কর্তৃক কোন বিষয়ক পদরচনার খবর পাওয়া গেছে?
(ক) রাধাকৃষ্ণ-লীলা বিষয়ক
(খ) ইসলাম ধর্ম বিষয়ক
(গ) দেব-দেবীবিষয়ক
(ঘ) হজরত বিষয়ক
ক
৪। রোসাঙ-এর মগ রাজাগণ ধর্মে ছিলেন –
(ক) খ্রিস্টান
(খ) হিন্দু
(গ) বৌদ্ধ
(ঘ) ইসলাম
গ
৫। রোসাঙ রাজসভার পাত্রমিত্ররা অনেকেই কোন শ্রেণির মুসলমান ছিলেন ?
(ক) বাঙালি
(খ) বিহারি
(গ) আরাকান
(ঘ) রোসাঙ
ক
৬। আরাকানি বৌদ্ধ রাজারা সিংহাসনে আরোহণ করে কী নাম গ্রহণ করতেন?
(ক) হিন্দু
(খ) বৌদ্ধ
(গ) মুসলমান
(ঘ) কোনোটাই নয়
গ
৭। রোসাঙ রাজসভার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি হলেন –
(ক) শ্রীবর্মা
(খ) দৌলত কাজি
(গ) আলাওল
(ঘ) মোহাম্মদ খান
খ
৮। দৌলতকাজি রচিত কাব্যের নাম হল –
(ক) নবীবংশ
(খ) রসুলবিজয়
(গ) মত্তুল হোসেন
(ঘ) সতী ময়নামতী
ঘ
৯। দৌলত কাজি কোন্ ধর্মে অনুরক্ত ছিলেন?
(ক) বৈষ্ণব
(খ) হিন্দু
(গ) সুফি
(ঘ) ইসলাম
গ
১০। সুধির্ম মূলত –
(ক) অহিংসা ধর্ম
(খ) সর্বধর্ম সমন্বয়
(গ) জ্ঞান ধর্ম
(ঘ) প্রেমধর্ম
ঘ
১১। দৌলত কাজির সতী ময়নামতী কাব্যটির অপর নাম কী?
(ক) লোরচন্দ্রাণী
(খ) পদ্মাবতী
(গ) পদুমাবৎ
(ঘ) হপ্ত পয়কর
ক
১২। দৌলত কাজির ‘সতী ময়নামতী’ কাব্যের দুটি প্রধান চরিত্রের নাম লেখো।
(ক) লোর ও চন্দ্রাণী
(খ) অমুল্য ও লোর
(গ) সতী ও ময়নামতী
(ঘ) কোনোটাই নয়
ক
১৩। গোহারি রাজ্যের রাজার মেয়ের নাম ছিল –
(ক) সতী
(খ) ময়নামতী
(গ) চন্দ্রাণী
(ঘ) চন্দ্রপ্রভা
গ
১৪। রাজকন্যা চন্দ্রাণীর প্রথম বিবাহ হয়েছিল কার সঙ্গে?
(ক) লোরের
(খ) বামনের
(গ) রত্নসেন
(ঘ) কোনোটাই নয়
খ
১৫। রোসাঙ রাজসভার দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন –
(ক) জৈনুদ্দিন
(খ) শাহ সৈয়দ সুলতান
(গ) মোহাম্মদ খান
(ঘ) আলাওল
ঘ
১৬। আলাওলের পিতা কার সভাসদ ছিলেন?
(ক) নবাব কুতুবের
(খ) রাজা গোহারির
(গ) বামনের
(ঘ) কোনোটাই নয়
ক
১৭। আলাওল রোসাঙে প্রথম জীবনে অশ্বারোহীর কোন্ কাজ গ্রহণ করেছিলেন?
(ক) রাজসৈনিকের
(খ) দূতের
(গ) রাজসেনাপতির
(ঘ) কোনোটাই নয়
ক
১৮। রোসাঙ রাজসভায় রচিত আলাওলের প্রথম কাব্য হল –
(ক) সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জমাল
(খ) পদ্মাবতী
(গ) হপ্তপয়কর
(ঘ) রসুল চরিত
খ
১৯। ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের কাহিনি কোন সূত্র থেকে গৃহীত?
(ক) আলাউদ্দিন-পরিনী
(খ) শাজাহান-মমতাজ
(গ) পৌরাণিক কাহিনি
(ঘ) কোনোটাই নয়
ক
২০। ‘সতী ময়নামতী’ কাব্যটি কার হাতে সমাপ্ত হয়েছিল?
(ক) দৌলত কাজি
(খ) জায়সী
(গ) আলাওল
(ঘ) সাবিরিদ খান
গ
২১। ‘সেকেন্দারনামা’ কাব্যটি কার রচনা?
(ক) আলাওল
(খ) দৌলত কাজি
(গ) মোহাম্মদ খান
(ঘ) জৈনুদ্দিন
ক
২২। সৈয়দ আলাওল কোন সময়ে বর্তমান ছিলেন?
(ক) পঞ্চদশ শতক
(খ) সপ্তদশ শতক
(গ) ষোড়শ শতক
(ঘ) অষ্টাদশ শতক
খ
২৩। সৈয়দ আলাওল মৃত্যুবরণ করেন কত খ্রিস্টাব্দে?
(ক) ১৬৭০
(খ) ১৬৭৩
(গ) ১৬৭৪
(ঘ) ১৬৭২
খ
২৪। আলি রাজা বৈষ্ণবপদ ছাড়াও কিছু কিছু — পদ রচনা করেছিলেন।
(ক) কবিতা
(খ) শাক্তপদ
(গ) গান
(ঘ) কোনোটাই নয়
খ
২৫। ‘জ্ঞানসাগর’, ‘সিরাজকুলুপ’, ‘ধ্যানমালা’, ‘যোগকালান্দর’, ‘ষটচক্রভেদ’ গ্রন্থগুলির রচয়িতা হলেন –
(ক) দৌলত কাজি
(খ) আলাওল
(গ) আলি রাজা
(ঘ) কেউ নন
গ
২৬। সৈয়দ মর্তুজা, নসির মামুদ, আলি রাজা — কবি হিসাবে উল্লেখযোগ্য।
(ক) বৈষ্ণব
(খ) আধুনিক
(গ) শান্ত
(ঘ) কোনোটা নয়
ক
১। চট্টগ্রাম এবং আরাকান পরস্পর যুক্ত হওয়ার কারণ কী ছিল?
আরব বণিকদের ব্যাবসা সূত্রেই চট্টগ্রাম এবং আরাকান পরস্পর যুক্ত হয়েছিল।
২। শাহ মোহাম্মদ সগীর-এর লেখা একটি কাব্যের নাম লেখো।
শাহ মোহাম্মদ সগীরের লেখা কাব্যের নাম হল ‘ইউসুফ-জোলেখা’।
৩। ‘নবীবংশ’ গ্রন্থটি কার রচনা?
‘নবীবংশ’ গ্রন্থটি সপ্তদশ শতকের কবি শাহ সৈয়দ সুলতানের লেখা।
৪। ‘মত্তুল হোসেন’ গ্রন্থটি কার রচনা? এর বিষয়বস্তু কী?
‘মত্তুল হোসেন’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন মোহাম্মদ খান।
গ্ৰন্থটি মোটামুটি কারবালা যুদ্ধ বিষয়ক কাহিনির অনুবাদ।
৫। দৌলত কাজি রচিত কাব্যের নাম কী?
দৌলত কাজি রচিত কাব্যের নাম লোরচন্দ্রাণী’ বা ‘সতী ময়না’।
৬। দৌলত কাজি কোন্ রাজার সভাকবি ছিলেন?
দৌলত কাজি আরাকানের রাজা থিরি-থু-ধম্মার (শ্রীসুধর্মা) সভাকবি ছিলেন।
৭। দৌলত কাজির অর্ধসমাপ্ত কাব্য কে সমাপ্ত করেন ?
দৌলত কাজির অর্ধসমাপ্ত কাব্য সমাপ্ত করেন সৈয়দ আলাওল।
৮। দৌলত কাজি কোন্ কাব্য অবলম্বনে ‘সতী ময়না’ কাব্য রচনা করেন?
দৌলত কাজি ‘মইনা কা সত’ নামে হিন্দি কাব্য অবলম্বনে ‘সতী ময়না’ কাব্য রচনা করেন।
৯। কোন সময়ে সৈয়দ আলাওলের জন্ম হয়েছিল?
ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে সৈয়দ আলাওল জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
১০। আলাওলের শ্রেষ্ঠ কাব্য কোনটি?
আলাওলের শ্রেষ্ঠ কাব্য হল হিন্দি কবি মহম্মদ জায়সির ‘পদুমাবৎ’ কাব্য অবলম্বনে রচিত ‘পদ্মাবতী”।
১১। সৈয়দ আলাওলের চারটি কাব্যের নাম লেখো।
সৈয়দ আলাওলের চারটি কাব্য হল ‘হপ্তপয়কর (১৬৬০), ‘তোহফা’ (১৬৬৩-৬৯), ‘সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জমাল’ (১৬৬৮-৭০), ‘সেকেন্দারনামা’ (১৬৭২)।
১২। সৈয়দ আলাওল ‘পদ্মাবতী’ কাব্য কার উৎসাহে রচনা করেছিলেন?
সৈয়দ আলাওল ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি মাগন ঠাকুরের উদ্দেশ্যে রচনা করেছিলেন।
১৩। সৈয়দ আলাওলের আদি নিবাস কোথায় ছিল?
সৈয়দ আলাওলের আদি নিবাস ছিল ‘মুল্লুক ফতেহাবাদ’-এর জামালপুর গ্রামে।
১৪। চিতোরের রাজা ও তাঁর পত্নীর নাম কী ছিল?
চিতোরের রাজা ছিলেন রত্নসেন এবং পত্নীর নাম নাগমতী।
১৫। রাজা রত্নসেন কোন বেশে সিংহল যাত্রা করেছিলেন?
রাজা রত্নসেন শিক্ষিত শুকপাখি নিয়ে যোগীর বেশে সিংহলে যাত্রা করেছিলেন।
১৬। হপ্তপয়কর’ মূল কাব্যটি কার রচিত?
‘হপ্তপয়কর’ মূলকাব্যটি ফারসি কবি নিজামির রচিত।
১৭। ‘দারা সেকেন্দর নামা’ কাব্যটির বিষয়বস্তু কী?
‘দারা সেকেন্দর নামা’ কাব্যটি নিজামির ফারসি কাব্যের ভাবানুবাদ, যাতে গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডারের বিজয় কাহিনি বর্ণিত।
১। কোন্ রাজসভার কোন কবি ‘পদ্মাবতী’ রচনা করেন ? এই কাব্যের বৈশিষ্ট্য কী ? ১+৪ (২০১৪)
আরাকান রাজসভা তথা রোসাঙ রাজসভার কবি সৈয়দ আলাওল ‘পদ্মাবতী’ কাব্য রচনা করেন।
আরাকান রাজসভার দুই অমাত্য মাগন ঠাকুর এবং সুলেমানের অনুরােধে সুফি-কবি মালিক মহম্মদ জায়সির হিন্দি কাব্য ‘পদুমাবৎ’ অবলম্বনে সৈয়দ আলাওল আনুমানিক ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি রচনা করেন। মূল ও অনুবাদ দুটি কাব্যেরই প্রধান উপজীব্য হল চিতােরের রানি পদ্মিনীর রূপের কথা শুনে দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খলজির চিতাের আক্রমণ, যুদ্ধে চিতােরের রানার পরাজয় ও মৃত্যু এবং পরিশেষে রানির আত্মবিসর্জন।
সুফি কবি জায়সি রাজস্থানে প্রচলিত পদ্মিনী বা পদ্মাবতী কাহিনি নিয়ে তাঁর কাব্যটি রচনা করলেও সুফি ধর্মতত্ত্ব ও রূপকের প্রয়ােগ করে তাঁর কাব্যটিকে ভারাক্রান্ত করে তুলেছিলেন। অন্যদিকে পদ্মাবতী কাব্যে মূল কাহিনির সঙ্গে কল্পনা মিশ্রিত হয়ে এক রােমান্টিক জগতের সৃষ্টি হয়েছে। কবি আলাওল ইতিহাস এবং কিংবদন্তির প্রেক্ষাপটে এখানে এক মানবিক প্রেমকাহিনি পরিবেশন করেছেন।
কাব্যে সংস্কৃত কাব্যাদর্শ অনুযায়ী নায়িকার রূপবর্ণনা, হিন্দু ও সুফিদর্শনের ভাববিন্যাসে এবং যােগ-সাধনার গূঢ়তত্ত্ব বিশ্লেষণেও কবি আলাওল বিস্ময়কর কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। এই কাব্যের ভাষা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল। তবে অলংকার প্রয়ােগের আতিশয্য কখনও কখনও রচনাকে আড়ষ্ট করে তুলেছে। অবশ্য মধ্যযুগের ধর্ম-প্রচারমূলক বাংলা সাহিত্যধারায় এই ধরনের মানবিক প্রেমকাহিনি সত্যই অনন্য।
২। আরাকান রাজসভার কবি দৌলত কাজির জীবন ও কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আরাকান রাজসভার নাম উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। সেই সময় রোসাঙ ছিল আরাকানের রাজধানী, তাই আরাকানের রাজসভা রোসাঙের রাজসভারূপে অধিকতর পরিচিত। এই রোসাঙের রাজসভাতেই শক্তিশালী বাঙালি কবিদের আবির্ভাব ঘটেছিল। মুসলমান ধর্মাবলম্বী কবিগণ আরবি ফারসি ভাষার মধ্যে তাঁদের কাব্যচর্চা সীমিত না রেখে বাংলা ভাষাকে সাহিত্যসৃষ্টির মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন।
সপ্তদশ শতাব্দীতে আবির্ভূত কবি দৌলত কাজি সুধর্মার সেনাপতি আশরাফ খানের উৎসাহে ও পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দি কবি মিয়া সাধনের ‘মৈনা কো সত্’ অবলম্বনে ‘লোরচন্দ্রাণী’ বা ‘সতী ময়না’ নামক রোমান্টিক আখ্যানকাব্য রচনা করেন। লোরচন্দ্রাণী’ বাংলা সাহিত্যে প্রথম ধর্মসংস্কারমুক্ত মানবীয় প্রণয় কাহিনির কাব্য। তবে কবি কাব্যটির শেষপর্যন্ত রচনা করতে পারেন নি, কারণ তাঁর মৃত্যু হয়। কাব্যটি শেষ করেন কবি সৈয়দ আলাওল।
দৌলত কাজি সতী ময়নার যে অংশটুকু লিখেছেন, সে পর্যন্ত কাহিনি সংযত ও পরিচ্ছন্ন। ছন্দজ্ঞান এবং অলংকার প্রয়োগের দক্ষতা সন্দেহাতীত। শব্দচয়নের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন সচেতন শিল্পী এবং কবির রচনায় মর্ত্যভাবনার প্রকাশ ঘটেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
মাটি হস্তে রত্নমণি রুপের প্রতিমা।
সৃজিয়া প্রকাশে বিধি আপন মহিমা।।
ব্যঞ্জনাময় উত্তিতেও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ‘মন বিনা তনু যেন মৃত্তিকা পিঞ্জর।’ কবি মুসলমান ধর্মাবলম্বী হলেও হিন্দুসমাজ ও পুরাণের নিখুঁত বর্ণনায় অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। মর্ত্যপ্রেম ও মানুষের প্রতি গভীর মমতায় তাঁর কাব্য মধ্যযুগের এক বিরল ব্যতিক্রম। সুফি কবিদের মতোই মানুষ সম্পর্কে তিনি বলেছেন –
নিরঞ্জন সৃষ্টি নব
অমুল্য রতন।
ত্রিভুবনে নাহি কেহ
তাহার সমান।
৩। সৈয়দ আলাওলের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।
সুফিসাধক সৈয়দ আলাওল কবি মহম্মদ জায়সির হিন্দি ভাষায় রচিত ‘পদুমাবৎ’ নামক কাব্যটি অনুসরণ করে ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি রচনা করেন। বলা বাহুল্য, কবি তাঁর রচনায় কাহিনি ও চরিত্রবর্ণনায় স্বকীয়তা দেখিয়েছেন। ধর্মের গোঁড়ামি নেই, রয়েছে হিন্দু-মুসলমান সংস্কৃতির কথা, রয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি, গোরক্ষবিজয় এবং বিদ্যাসুন্দর কাহিনির প্রভাব।
কাব্যের ভাষা প্রসাদগুণসম্পন্ন এবং ব্যঞ্জনাসমৃদ্ধ। ড. দেবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “দৌলত কাজি ও সৈয়দ আলাওল মুসলমান কবি হয়েও তাঁদের কাব্যে হিন্দু পুরাণ ও রামায়ণ মহাভারতের অজস্র উল্লেখ, সংস্কৃত তৎসম শব্দের প্রচুর ব্যবহার; বিবিধ শাস্ত্র ও অলংকারের নিদর্শন এই পান্ডিত্যের পরিচয়কে বহন করে।”
আলাওলের পরবর্তী রচনাগুলি পদ্মাবতীর সমতুল্য হতে পারে নি। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সয়ফুল মুলুক বদিউজ্জামাল’ (১৬৫৮-৭০), ‘তোহফা’ (১৬৬৩-৬৯), ‘হপ্তপয়কর’ (১৬৬০), ‘সেকেন্দারনামা’ (১৬৭২)।
অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আলাওল মধ্যযুগীয় মুসলিম বাংলা সাহিত্য ও মুসলমান সমাজের যে একজন বিশ্রুতকীর্তি কবি তাতে সন্দেহ নেই; তাঁর একখানি কাব্য (পদ্মাবতী) সম্প্রদায়ের সীমা লঙ্ঘন করে বাংলা ভাবী সমাজের বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।”