করণকারক

করণ কারক কাকে বলে ? করণ কারকের প্রকারভেদ।

করণকারক কাকে বলে ?

 কর্তা যার সাহায্যে ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে করণকারক বলে। অর্থাৎ বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কী দ্বারা’ প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি পাওয়া যায়, তা-ই করণকারক।

উদাহরণ – রমেশ কলম দিয়ে লেখে। এখানে ‘কলম’- র দ্বারা কাজটি নিষ্পন্ন হওয়ায় ‘কলম’ হল করণ কারক এবং এর সঙ্গে ‘দিয়ে’ অনুসর্গটি যুক্ত হয়েছে।

মানুষ বুদ্ধির দ্বারা অনেক কিছু হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। এখানে ‘বুদ্ধির’- র দ্বারা কাজটি নিষ্পন্ন হওয়ায় ‘বুদ্ধি’ হল করণ কারক এবং এর সঙ্গে ‘দ্বারা’ অনুসর্গটি যুক্ত হয়েছে।

করণের প্রকারভেদ

করণ সাধারণত আট প্রকার – ১) সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ , ২) উপায়াত্মক করণ , ৩) হেত্বর্থক করণ , ৪) কালাত্মক করণ , ৫) লক্ষণাত্মক করণ , ৬) সমধাতুজ করণ , ৭) অসমাপিকা ক্রিয়ারূপীকরণ , ৮) করণের বীপ্সা

সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও

কোন বস্তু বা যন্ত্র দ্বারা ক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাকে সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ  বলে।

উদাহরণ – ছুরি দিয়ে সবজি গুলো কেটে ফেলো।এখানে ছুরির দ্বারা কাজটি নিষ্পন্ন হওয়ায় ‘ছুরি’ হল করণ কারক এবং এর সঙ্গে ‘দিয়ে’ অনুসর্গটি যুক্ত হয়েছে।

উপায়াত্মক করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

যে উপায়ের মাধ্যমে ক্রিয়া সম্পন্ন হয় বা নিষ্পন্ন হয় তাকে উপায়াত্মক করণ বলে।

উদাহরণ – ভারত শুধু বুদ্ধি দিয়ে ক্রিকেটটা খেলল। এখানে বুদ্ধি উপায়ের দ্বারা ক্রিকেটটা খেলা হয়েছে বলে ‘বুদ্ধি’ হল উপায়াত্মক করণের  উদাহরণ।

হেত্বর্থক করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

হেতু বা কারণ বোঝাতে যে করন ব্যবহৃত হয় তাকে হেত্বর্থক করণ বলা হয়।

উদাহরণ – বৃদ্ধ মানুষটি তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়েছে। এখানে ‘তৃষ্ণা’ হেতুর জন্য বৃদ্ধ মানুষটি কাতর হয়ে পড়েছে । সে কারণে ‘তৃষ্ণায়’ হল হেত্বর্থক করণ ।

কালাত্মক করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

 কাল বা সময় বোঝাতে যে করণ ব্যবহৃত হয় তাকে কালাত্মক করণ বলা হয়।

উদাহরণ – ত্রিশ দিনে এক মাস হয়। এখানে সময় ও কাল বোঝাচ্ছে বলে ‘ত্রিশদিনে’ হল কালাত্মক করণের উদাহরণ।

লক্ষণাত্মক করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

কোন লক্ষণ বা চিহ্ন বোঝাতে যে করণ ব্যবহৃত হয় তাকে লক্ষণাত্মক করণ বলা হয়।

উদাহরণ – শিকারী বিড়াল গোঁফে চেনা যায়। এই বাক্যটিতে ‘গোঁফ’ শব্দের দ্বারা লক্ষণ বা চিহ্ন নির্দেশ করেছে বলে গোঁফ হল উপ লক্ষণে বা লক্ষণাত্মক করণের উদাহরণ।

সমধাতুজ করণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

বাক্যের ক্রিয়া ও করণ যখন একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয় তখন তাকে সমধাতুজ করণ বলে।

উদাহরণ – বেঞ্চ গুলো ঝাড়ন দিয়ে  ঝেড়ে দাও। বাক্যটিতে ‘ঝাড়ন’ ও ‘ঝেড়ে’ একই ধাতু ‘ঝাড়’  থেকে নিষ্পন্ন হওয়ায় এখানে ‘ঝাড়ন’ সমধাতুজ করণ।

অসমাপিকা ক্রিয়ারূপীকরণ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

কোন অসমাপিকা ক্রিয়া করণের মতো আচরণ করলে তাকে অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী করণ বলা হয়।

উদাহরণ – সে অনুষ্ঠানে গান গেয়ে সকল দর্শকের মন জয় করল। এখানে ‘গান গেয়ে’ অসমাপিকা ক্রিয়া টি করণের মত আচরণ করায় এটি অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী করণ হয়েছে।

করণের বীপ্সা কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

একই শব্দের পুনরাবৃত্তি বোঝাতে বা একই শব্দের দুইবার প্রয়োগ ঘটাকে করণের বীপ্সা বলে।

উদাহরণ – আমরা হাতে হাতে বইগুলো করে নিই। এখানে ‘হাতে হাতে’ শব্দদ্বয় করণের বীপ্সার উদাহরণ।

Leave a Comment