গালিলিও: একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রবন্ধ

গালিলিও একাদশ শ্রেণী বাংলা সাহিত্য চর্চার প্রবন্ধ। গালিলিওর রচয়িতা হলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। গালিলিও প্রবন্ধ হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর নিম্নে দেওয়া হল।

Bengali Class xi / Eleven Galileo Question Answer. গালিলিও হতে 5 নং প্রশ্ন ও উত্তরগুলি দেওয়া হল।

বিষয়বাংলা
শ্রেণীএকাদশ শ্রেণী বাংলা প্রবন্ধ
গল্পগালিলিও
রচনাসত্যেন্দ্রনাথ বসু
গালিলিও

Table of Contents

গালিলিও প্রবন্ধ হতে বড় প্রশ্ন ও উত্তর

গালিলিও – সত্যেন্দ্রনাথ বসু


১. “নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”—দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন কেন? (২০১৪, ২০১৬) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত  ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

গালিলিও ভেনিসে থাকাকালীন নিজের তৈরি দূরবিনে চোখ রেখে লক্ষ্য করেন যে, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও বন্ধুর, যা চাঁদের পাহাড় নামে অভিহিত এবং ছায়াপথ প্রকৃতপক্ষে লক্ষ লক্ষ তারার সমাবেশ। বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদকেও তিনি পর্যবেক্ষণ করেন। গালিলিও স্বদেশে ফিরে লক্ষ্য করেন সূর্যমণ্ডলের অসংখ্য কলঙ্কবিন্দু। চাঁদের ন্যায় শুক্রগ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনিগ্রহের চারিদিকের বলয়রেখাও তিনি পর্যবেক্ষণ করেন।

গালিলিও ভেনিসে থাকাকালে দূরবিনের সাহায্যে যে চাঁদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতির চারটি উপগ্ৰহ এবং পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদকে আবিষ্কার করেছিলেন, তা সেখানকার ধার্মিক পণ্ডিতেরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চান নি। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই সনাতনীরা গালিলিওর শত অনুরােধ সত্ত্বেও দূরবিনে চোখ রাখেন নি। সম্ভবত তাঁদের ভয় ছিল, পাছে তাঁদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়। বরং তারা বলেন যা খালি চোখে দেখা যায় না, তা যদি যন্ত্র দিয়ে দেখা যায়, তাহলে সেটা মােটেও বাস্তব নয়, যন্ত্রেরই কারসাজি। 

এরপরই তারা গালিলিওর বিরুদ্ধতা শুরু করে। তারা জানিয়েছিলেন যে, গালিলিও আসলে চালাকির সাহায্যে কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক ব্ৰহ্মাণ্ড-বিন্যাসের স্বপক্ষে যুক্তি সংগ্রহের মতাে অন্যায়-কর্ম করছেন।


২. “এই স্বভাবই শেষ জীবনে তার অশেষ দুঃখের কারণ হলাে” – কার কোন্ স্বভাবের কথা বলা হয়েছে? সেই স্বভাব তার শেষ জীবনে অশেষ দুঃখের কারণ হলাে কীভাবে? (২০১৫) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে যুক্তিতর্কের প্রতি গালিলিওর অবিচল প্রবণতার দিক, যা তার কিছুটা তীব্র একগুঁয়েমির শামিল – সেই স্বভাবের কথাই আলোচ্য অংশে বলা হয়েছে।

গালিলিওর লক্ষ্য ছিল জগতের সকল মানুষ বিশ্বপ্রকৃতির মর্মকথা বােধবুদ্ধি দিয়ে উপলদ্ধি করুক ও তাদের মধ্যে যথার্থ সত্য জ্ঞানের উদ্বোধন ঘটুক। তাঁর ইটালিয়ান ভাষায় লেখা জ্যোতিষ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের বইয়ের বিরুদ্ধতা করেন সনাতনীরা। একদিকে যেমন ফ্লেরেন্সের ডােমিনিকান সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীরা বিরােধিতা করলেন, তেমনি অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্ররা তার আবিষ্কার ও গবেষণার বিষয়কে মানতে পারলেন না। ধর্মযাজকেরা প্রচার শুরু করেন যে, গালিলিওর অধ্যাপনা ধর্মবিশ্বাসের পরিপন্থী, বাইবেলের প্রতি মানুষের আস্থার ওপর আঘাতকারী। 

ক্ষুব্ধ পােপ ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে কার্ডিনাল বেলারিমিনকে দায়িত্ব দিলেন গালিলিওকে বােঝানাের। পরবর্তীতে নতুন পােপ টলেমি ও কোপারনিকাসের বিশ্ববিন্যাসের গুণাগুণ সংক্রান্ত আলােচনার বইকে গালিলিওর বৃথা গর্বের অজ্ঞতা ও অসতর্কতার নিদর্শন হিসেবে গণ্য করে তাকে কারারুদ্ধ করেন। 

অনুতাপব্যঞ্জক সাদা পােশাক পরে হাঁটু গেড়ে তাকে বলতে হল কোপারনিকাসের মত তিনি ত্যাগ করেছেন। এরপরও ক্যাথলিক ধর্মপন্থীদের অনুশাসনে জীবনের শেষ ন-টি বছর গৃহে অন্তরিন অবস্থায় তাকে অশেষ দুঃখে কাটাতে হয়, সে জন্য তাঁর স্বভাবের অটল দৃঢ়তা নিশ্চিতভাবে দায়ী।


৩. ক্যাথলিক খ্রিস্টান যাজকদের সাথে গ্যালিলিওর বিরোধের কারণ কী ? গ্যালিলিওর জীবনের শেষ ন-বছর যে অবস্থায় কেটেছিল তার বিবরণ দাও। (২০১৭, ২০২২) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর লেখা ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে গালিলিও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে এমন অনেক নতুন কথা প্রকাশ করেন, যা পণ্ডিতমহলে সাড়া ফেলে দেয়। এই সময় টলেমির ভূকেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদের বিরুদ্ধে এবং কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদের সপক্ষে তিনি বই রচনা ও প্রকাশ করেন। এরপরই পিসা ও ফ্লোরেন্সের ডােমিনিকান সম্প্রদায়ের ধর্মযাজকরা প্রচার করতে শুরু করেন যে, গালিলিওর অধ্যাপনা প্রচলিত ধর্মানুরাগের বিপক্ষে, এমনকি তা বাইবেলের অনেক কথারও বিরােধী।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধে আমরা দেখি যে, ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল পােপের নির্দেশে গালিলিও রােমে উপস্থিত হলে, সেই দিনই তাকে কারারুদ্ধ করা হয় এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করাও নিষিদ্ধ হয়। ৩০ এপ্রিল গালিলিওকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় যে, বইয়ে কথােপকথনের ছলে তিনি যা-কিছু লিখেছেন, তা সমস্তই তাঁর অসতর্কতা, বৃথা অহংকার এবং অজ্ঞতার দৃষ্টান্ত। রােম শহরের ধর্মাধ্যক্ষরা গালিলিওকে বলতে বাধ্য করান যে, তিনি কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাস মতবাদে আর বিশ্বাসী নন। 

বিচারকরা জানায় যে, তার ভুল দেশের ভয়ংকর ক্ষতি করায় একদিকে যেমন তার বই নিষিদ্ধ বলে ঘােষিত হবে, অন্যদিকে বিচারপতিরা যতদিন চাইবেন তাকে কারারুদ্ধ থাকতে হবে। প্রথম তিন বছর ধরে প্রতি সপ্তাহেই তাকে অনুশােচনা-প্রকাশক প্রার্থনা করতে হবে। এই ঘটনার দুদিন পরেই রােমের বিচারপতিরা গালিলিওকে ফ্লোরেন্সের দূতাবাসে পাঠান। প্রথমে সিয়েনার আর্চবিশপ (প্রধান যাজক)-এর গৃহে, পরে ফ্লোরেন্স শহরের উপকণ্ঠে নিজের বাড়িতেই গালিলিওকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

এইসময় গালিলিওর জীবন একেবারে তিক্ত হয়ে উঠেছিল। যে মেয়ে তার সেবাযত্ন করত, সেই মেয়েটিও মারা যায়। শেষ পাঁচ বছর পােপের করুণায় বিধিনিষেধের হাত থেকে প্রায় অন্ধ গালিলিও কিছুটা মুক্তি পান। অবশেষে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি আটাত্তর বছর বয়সে এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে। 


৪. গালিলিও-র ছাত্রজীবন সম্পর্কে যা জান লেখাে। (২০১৮) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও প্রবন্ধে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী গালিলিওর ছাত্রজীবন নিখুঁতভাবে বর্ণিত হয়েছে। ছেলেবেলা থেকেই গালিলিও ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। পরিবারের ইচ্ছায় গালিলিও তেরাে বছর বয়সে বেনেডিকটিন সম্প্রদায়ের ভ্যালাম-ব্রোসার মঠে সাহিত্য, ন্যায় ও ধর্মশাস্ত্রের অধ্যয়ন করতে যান। 

এরপর সন্তানের সন্ন্যাসী হয়ে ঘর ছাড়ার ভয়ে গালিলিওর পিতা তাঁকে মঠ থেকে ছাড়িয়ে ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১৭ বছর বয়সে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়তে পাঠান। কিন্তু গালিলিও পিতার মতােই সংগীতশাস্ত্র ও চিত্রকলা ভালােবাসতেন, হয়তাে বড়াে চিত্রকরও হতে পারতেন। সেই সময় ছিল আরিস্টটলের যুগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রকেই দর্শন পড়তে হত। 

শৈশব থেকেই যুক্তিবাদী গালিলিও বিনা প্রশ্নে বা বিনা তর্কে কোনাে কিছুই অভ্রান্ত বলে মেনে নিতেন না। মাঝে মাঝে শিক্ষকের সঙ্গেও তার বাকযুদ্ধ বেঁধে যেত। এরপর ডাক্তারি পড়া ছেড়ে তিনি গণিত অধ্যয়ন করতে শুরু করেন। অল্প সময়েই তিনি গণিত ও পদার্থবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তার পাণ্ডিত্যের খ্যাতি ক্রমে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।


৫. ” ‘Venice’ –এ কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর কদর বেড়ে গেল। ” – কার কদর বাড়ে ? এই কদর বাড়ার কারণ ও পরিণাম উল্লেখ করো।  (২০১৯) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত আলোচ্য অংশে বিখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর কদর বাড়ার কথা বলা হয়েছে। 

১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্সের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসে থাকাকালীন গালিলিও হল্যান্ডবাসী এক ব্যক্তির নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের সংবাদ শুনতে পান, যে যন্ত্রের সাহায্যে দূরের বস্তু কাছে দেখা যায়। এর কিছুদিন পরই তিনি দূরবিন আবিষ্কার করেন। এই দূরবিন আবিষ্কারের জন্যই ভেনিসের কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে যায়। 

প্রকৃতপক্ষে সেই যুগে ভেনিস ছিল সমুদ্র বাণিজ্যে উন্নত সমৃদ্ধশালী নগররাষ্ট্র। সমুদ্রপথে জাহাজে করে ভেনিসবাসীরা নানা দেশ থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করত এবং ইউরােপের নানা দেশে তা রপ্তানিও করত। কিন্তু মাঝে মধ্যেই ভেনিসের বাণিজ্য-জাহাজগুলিকে শত্রুরাষ্ট্রের আক্রমণের কবলে পড়তে হত। এই আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে জরুরি ছিল শত্রুর আক্রমণের আগাম খবর পাওয়া। 

তাই শত্রুকে আগে থেকেই লক্ষ্য করার জন্য বা আগাম যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য ভেনিস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি জাহাজে একটি করে দূরবিন রাখার প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেন। তাই তারা গালিলিওকে দূরবিন জোগান দেওয়ার অনুরােধ জানান। এই দূরবিন আবিষ্কারের কারণেই ভেনিস-এর কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল

ভেনিস রাষ্ট্রের শাসকদের কাছে গালিলিওর মর্যাদা বৃদ্ধি করে এই দূরবিন। প্রচুর পরিমাণে দূরবিন তৈরিতে গালিলিও ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অন্যদিকে দূরবিনের সাহায্যে তিনি চাঁদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেন। ভেনিসের ধর্মভীরু পণ্ডিতরা বলেন দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও যা কিছু দেখছেন, তা প্রকৃতপক্ষে যন্ত্রেরই কারসাজি। তার এইসব আবিষ্কারের জন্যই দেশেবিদেশে ক্রমশ তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং, দূরবিনের আবিষ্কার গালিলিওর জীবনে অর্থ এবং প্রশংসার বন্যা নিয়ে এসেছিল।


৬. “শিক্ষিত জনসাধারণের কাছে প্রচারের জন্য গ্যালিলিও ধরলেন এক নতুন পন্থা। ” – গ্যালিলিওর নতুন পন্থাটি কী ? তাঁর জীবনের শেষ অবস্থার বর্ণনা দাও। (২০২০, ২০২৩) 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত  ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত।

গালিলিও শিক্ষিত জনসাধারণের কাছে নিজের মত পৌঁছে দিতে লাতিন ভাষা ছেড়ে ইতালিয়ান ভাষায় লিখতে শুরু করেন – এটিই ছিল গ্যালিলিওর নতুন পন্থা। 

আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা দেখি যে, ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল পােপের নির্দেশে গালিলিও রােমে উপস্থিত হলে, সেই দিনই তিনি কারারুদ্ধ হন এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করাও নিষিদ্ধ হয়। ৩০ এপ্রিল গালিলিওকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় যে, বইয়ে কথােপকথনের ছলে তিনি যা-কিছু লিখেছেন, তা সমস্তই তাঁর অসতর্কতা, বৃথা অহংকার এবং অজ্ঞতার দৃষ্টান্ত। রােম শহরের ধর্মাধ্যক্ষরা গালিলিওকে বলতে বাধ্য করান যে, তিনি কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাস মতবাদে আর বিশ্বাসী নন। 

বিচারকরা তাঁকে জানায় যে, তার ভুল দেশের ভয়ংকর ক্ষতি করায় তার বই নিষিদ্ধ বলে ঘােষিত হবে এবং বিচারপতিরা যতদিন চাইবেন তাকে কারারুদ্ধ থাকতে হবে। কারাবাসের প্রথম তিন বছর প্রতি সপ্তাহেই তাকে অনুশােচনা-প্রকাশক প্রার্থনা করতে হবে। 

অবশ্য এই ঘটনার দুদিন পরই রােমের বিচারপতিরা গালিলিওকে ফ্লোরেন্সের দূতাবাসে পাঠান। প্রথমে সিয়েনার আর্চবিশপ (প্রধান যাজক)-এর গৃহে, পরে ফ্লোরেন্স শহরের উপকণ্ঠে নিজের বাড়িতেই গালিলিওকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

এই সময় গালিলিওর জীবন একেবারে তিক্ত হয়ে উঠেছিল। যে মেয়ে তার সেবাযত্ন করত, সেই মেয়েটিও মারা যায়। শেষ পাঁচ বছর পােপের করুণায় বিধিনিষেধের হাত থেকে প্রায় অন্ধ গালিলিও কিছুটা মুক্তি পান। অবশেষে ১৬৪২ সালের ৮ জানুয়ারি আটাত্তর বছর বয়সে এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে। 


৭. গালিলিও’ প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও।

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে জগৎ-বিখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর জীবনকথা বর্ণিত হয়েছে। পিতার ইচ্ছায় সতেরাে বছর বয়সে ডাক্তারিতে ভরতি হলেও গালিলিও ক্রমশ পদার্থবিদ্যা ও গণিতে উৎসাহী হন এবং পরবর্তীতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। এইভাবেই শুরু হয় তাঁর বিজ্ঞানসাধনা। প্রথমদিকে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে, তারপর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসের পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। 

সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমদিকেই গালিলিও কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাসে আস্থাশীল হয়ে পড়েন। এই সময়েই হল্যান্ডবাসী এক ব্যক্তির আবিষ্কারের সংবাদ শুনে গালিলিও দূরবিন যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেন। দূরবিনে চোখ রেখে গালিলিও চাঁদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতি গ্রহের চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদকে পর্যবেক্ষণ করেন। 

স্বদেশে ফিরে তিনি সূর্যমণ্ডলের কলঙ্কবিন্দু, শুক্ৰগ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনির বলয় পর্যবেক্ষণ করেন। কোপারনিকাসের মতবাদের সপক্ষে মাতৃভাষা ইটালিয়ানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি বই লিখে রােমের ইনকুইজিসনে তিনি অপমানিত এবং ভর্ৎসিত হন। দীর্ঘদিন পর ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে কথােপকথনের আদলে গালিলিও সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহাণ্ডবাদের সপক্ষে আরও একটি বই লেখেন। এই বইটির জন্যই গালিলিওর শেষ নয় বছরের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে ৭৭ বছর বয়সে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার অবসান ঘটে।


৮। সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর পরিবারের পরিচয় দাও। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গালিলিওর ভূমিকা আলােচনা করাে।

বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক গালিলিওর পরিবারের যে পরিচয় পাওয়া যায়, তা নিম্নরূপ – 

১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির অন্তর্গত তাস্কানীর পিসা শহরে বিজ্ঞানী গালিলিও জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার পদবি ছিল গালিলাই। গালিলিওর পিতা ছিলেন সংগীত ও গণিতশাস্ত্রে পারদর্শী, ভালাে লিউট বাজাতে পারতেন, পুরাণ সাহিত্যের এক খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। সংগীততত্ত্বের ওপর বইও লিখেছিলেন তিনি। গালিলিওর পরিবারে ছিল তার মা, এক ভাই এবং দুই বােন। ভাই মাইকেল এঞ্জেলাে স্ত্রী এবং সাত সন্তানকে ফ্লোরেন্সে রেখে পােল্যান্ডে চলে যান এবং সেখানকার রাজদরবারের কলাবিদ হন।

১৫৯১ খ্রিস্টাব্দে পিতা মারা গেলে পরিবারের সমস্ত দায়দায়িত্ব সাতাশ বছরের যুবক গালিলিওর ওপর এসে পড়ে। মা ও দুই বােন এবং ভাইয়ের পরিবারের আটজনের ভরণপােষণের দায়ও এসে পড়ে গালিলিওর ওপর। এই বিরাট সংসার প্রতিপালনের জন্যই তাকে ‘প্রচুর অর্থাগম’-এর কথা সবসময় চিন্তা করতে হত। 

প্রচুর অর্থাগম’-এর লক্ষ্যে, তিনি কখনও ব্যাবসা করার কথা ভেবেছেন, আবার কখনও ভালাে-বেতনের চাকরির জন্য অন্যের কৃপাপ্রার্থনাও করেছেন। ভালাে মাইনের চাকরির জন্যও তাকে এখানে-ওখানে ছুটে বেড়াতে হয়েছে। তাঁকে কর্মসূত্রে বিদেশ ভেনিসে থাকতে হয়েছে দীর্ঘ আঠারাে বছর। এই সবই তিনি করেছেন বৃহৎ পরিবারকে প্রতিপালনের উদ্দেশ্যেই।


৯. “গালিলিও রাজি হলেন,”—কোন্ ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন গালিলিও? গালিলিওর জীবনের শেষ পাঁচ বছরের পরিচয় দাও।

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে আমরা দেখি ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ইনকুইজিসনের বিচারকরা রােমে পােপের কাছে গালিলিওর বিরুদ্ধে অভিযােগ জানায়। এরপর পােপ, কার্ডিনাল বেলারিমিনকে ভার দেন গালিলিওকে বোঝানোর জন্য। গালিলিওর প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষী এই উদার মনের মানুষটি গালিলিওকে বাস্তববাদী হওয়ার জন্য অনুরােধ করেন। তিনি তাকে বুঝিয়ে বলেন, গালিলিও যেন কোপারনিকাসের তত্ত্ব নিয়ে ধর্মযাজকদের সঙ্গে অযথা তর্ক না করেন। এছাড়া, বাইবেলের পংক্তি উদ্ধৃত করে গালিলিওকে তাঁর নিজের মত ব্যাখ্যা করতেও নিষেধ করেন। কার্ডিনাল বেলারিমিনের এই সুপরামর্শেই গালিলিও রাজি হয়েছিলেন।

শেষ জীবনে ফ্লোরেন্স শহরতলীতে নিজের বাড়িতেই তাগালিলিওকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তবে, মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে তার ওপরের বাধা নিষেধ অনেকটাই শিথিল করা হয়। এই সময় দেশ বিদেশ থেকে বহু লােক তাঁকে দেখতে আসত। তার বই ও লেখা অবৈধভাবে অন্য দেশে চালান ও ছাপা হতে থাকে। তা ছাড়া, প্রােটেস্টান্ট মতাবলম্বী খ্রিস্টীয় জগতে তিনি প্রভূত খ্যাতি ও সহমর্মিতা লাভ করেছিলেন। গালিলিওর শেষ পাঁচ বছরের জীবনে এই সব বিষয়গুলিই তাঁর পক্ষে গিয়েছিল।


১০. ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিও-র চরিত্রের প্রতিবাদী সত্তার পরিচয় দাও।

বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে আমরা জানতে পারি যে, যথার্থ অর্থেই প্রতিবাদী ছিলেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিও।

মাত্র সতেরাে বছর বয়সে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারিতে ভরতি হওয়ার পর যুক্তিবাদী গালিলিও অ্যারিস্টটলের মতবাদের বিরােধী হয়ে ওঠেন। সহপাঠীদের সঙ্গে, এমনকি শিক্ষকদের সঙ্গেও তিনি বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তেন। গালিলিও ভেনিসে পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন টলেমির বিশ্ব মতবাদের বিরুদ্ধে এবং কোপারনিকাসের মতবাদের সপক্ষে অনেক বক্তৃতাও দেন। এখানেই ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে দূরবিন যন্ত্র নির্মাণ করে তিনি তার সাহায্যে চাঁদের পাহাড়, ছায়াপথের স্বরূপ, পৃথিবীর একটি উপগ্রহ এবং বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করে ভেনিসের ধর্মভীরু পণ্ডিতদের বিরাগভাজন হন।

১৬১১ খ্রিস্টাব্দে গালিলিও দেশে ফেরার পর ল্যাটিনের পরিবর্তে মাতৃভাষা ইটালিয়ানে লেখালেখি শুরু করেন। এই সময় তিনি কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদের সপক্ষে বই লিখে চরম বিরােধিতার মুখে পড়েন। এরপর কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরামর্শে তিনি পােপের সামনে কিছুটা সংযত আচরণ করেন। পরবর্তীকালে গতির কথা বা ভাসমান বস্তুর স্থিতিসাম্য, অথবা টলেমি এবং কোপারনিকাসের বিশ্ববিন্যাসের গুণাগুণ সম্পর্কিত আলােচনা মতবাদের আকারে লিখে ফেলা থেকে গালিলিও নিজেকে আটকাতে পারেন নি। এই প্রতিবাদী স্বভাবের জন্যই তিনি পােপের রােষানলে পড়েন এবং জীবনের শেষ ৯ বছর চরম দুঃখে কষ্টে অতিবাহিত করেন।


১১. ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিওর আপসকামী মনােভাবের যে পরিচয় দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিও চরিত্রের মহানুভবতার দিকটিই শুধু নয়, তার আপসকামী দিকটিকেও তুলে ধরেছেন।

সারা জীবনে বেশ কিছু ক্ষেত্রে গালিলিওকে আপস করতে হয়েছে। বৃহৎ একান্নবর্তী পরিবারের ভরণপােষণের জন্য অর্থনৈতিক কারণে কখনাে সখনাে আপস করেছেন তিনি। চাকরির জন্য তিনি যেমন উমেদারি করেছেন, তেমনি তাস্কানীর ডিউকের পুত্র কসমােকে পড়াতে গিয়ে রানিমার মন জোগানাের জন্য জ্যোতিষে অবিশ্বাসী হয়েও রাশিচক্র কেটে ভবিষ্যৎগণনা করেছেন। 

১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে রােম-নগরীর বিচারসভায় কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরামর্শে তিনি ধর্মযাজকদের সঙ্গে যেমন তর্ক করেন নি, তেমনি তার মতামত ব্যাখ্যা বা প্রমাণ করারও চেষ্টা করেন নি। তবুও তাকে সেখানে প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছিল যে, তিনি ভবিষ্যতে ধর্মবিরােধী কোনাে মত মুখে আনবেন না।

১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে বিচারসভায় অনুতাপব্যঞ্জক সাদা পােশাক পরে হাঁটু গেড়ে বসে তাকে বলতে হয়েছিল কথােপকথনের আকারে রচিত গ্রন্থে তিনি যা লিখেছেন, সে সবই তাঁর বৃথা গর্বের অজ্ঞতা ও অসতর্কতার নিদর্শন। তিনি একথাও বলতে বাধ্য হয়েছিলেন কোপারনিকাসের বিশ্ব-মতবাদে বিশ্বাস তিনি ত্যাগ করেছেন। অবশ্য একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধির জন্য কিন্তু গালিলিও কখনও আপস করেন নি।


১২. ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিওর জন্মস্থান পিসায় অতিবাহিত হওয়া তার ছেলেবেলার পরিচয় দাও।

সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি তাস্কানীর পিসা শহরে গালিলিও জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

মাত্র তেরাে বছর বয়সে তিনি সেন্ট বেনেডিকটিন ধর্মসম্প্রদায়ের ভ্যালাম-ব্রোসার মঠে সাহিত্য, ন্যায় ও ধর্মশাস্ত্র পড়ার উদ্দেশ্যে যান। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ বলে বেশি লেখাপড়া গালিলিওর পক্ষে ক্ষতিকারক – এই যুক্তিতে দুবছর পর গালিলিওকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনেন তাঁর পিতা। আসলে তিনি ভেবেছিলেন ছেলে যদি সন্ন্যাসী হয়ে যায় তাহলে তার অবর্তমানে দারিদ্র পরিবারের দিকে নজর দেবার আর কেউ থাকবে না। 

ছােটোবেলা থেকে সংগীত ও চিত্রকলায় আগ্রহী হলেও মাত্র সতেরাে বছর বয়সে, অর্থাৎ ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে, তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হন ডাক্তারি শাস্ত্র পড়ার জন্য। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-কোনাে ছাত্রকেই দর্শনশাস্ত্র পড়তে হত। অ্যারিস্টটলের মতবাদকে সবাই তখন বিনা প্রশ্নে মেনে নিতেন। গালিলিও যেহেতু বিনা তর্কে কোনাে কিছু গ্রহণ করারই পক্ষপাতী ছিলেন না-তাই সহপাঠীদের সঙ্গে, এমনকি অধ্যাপকদের সঙ্গেও তার তর্ক বাঁধত। এরপর পুরো পরিবার পিসা ছেড়ে ফ্লোরেন্সে চলে এলে মাঝপথে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দিয়ে গালিলিও পিসা শহর ত্যাগ করেন।


১৩. “গণিতের অধ্যয়ন বাসনাই প্রবল হয়ে উঠল।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলাে কীভাবে গালিলিওর গণিতের অধ্যয়ন- বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছিল?

বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত গালিলিও প্রবন্ধ থেকে আমরা জানতে পারি যে, গালিলিও পিসাতে ডাক্তারি পড়াশােনার সময়ে অ্যারিস্টটলের মতবাদকে কেন্দ্র করে সহপাঠী এবং শিক্ষকদের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। প্রমাণ ছাড়া কোনাে আপ্তবাক্যই তিনি মানতে চাইতেন না।

গণিতশাস্ত্রে মহাপণ্ডিত এক পারিবারিক বন্ধুর গণিত পাঠদান ঘটনাচক্রে শুনে গালিলিও গণিতের প্রতি উৎসাহী হয়ে ওঠেন। ক্রমশ তিনি ডাক্তারি বিদ্যায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। আসলে, একদিন তাস্কানী রাজসভার সভাপণ্ডিত সেই গণিতবিদের সঙ্গে পারিবারিক প্রয়ােজনে দেখা করতে ফ্লোরেন্সে গিয়েছিলেন গালিলিও। সেই বিখ্যাত গণিতবিদ তখন তাস্কানীর শাসকের পুত্রকে পড়াচ্ছিলেন। গালিলিও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে, আড়াল থেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে মনােযােগ সহকারে সেই গণিত-ব্যাখ্যা শুনে গণিতের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। এরপর নানাবিধ কারণে তাঁদের পুরো পরিবারকে পিসা ছেড়ে ফ্লোরেন্সে চলে আসতে হয়। 

অর্থনৈতিক কারণেই গালিলিওর পিতা তাঁকে পিসাতে রেখে পড়াতে পারেন নি। ফ্লোরেন্সে এসে গালিলিও সেই ‘সভাপণ্ডিত’ গণিতজ্ঞের কাছেই পদার্থবিদ্যা-সহ গণিতের পাঠ নিতে শুরু করেন। শীঘ্রই তিনি এই দুই বিষয়ে প্রভূত খ্যাতির অধিকারী হন এবং নিজের শিক্ষাগুরুকে অতিক্রম করে যান। এই ভাবেই গালিলিও হয়ে ওঠেন গণিত-বিশারদ।

Leave a Comment