মধ্যযুগে বাংলার সমাজ ও সাহিত্য প্রথম পর্ব তৃতীয় অধ্যায় বাঙ্গালীর শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রথম পর্ব তৃতীয় অধ্যায়: বাঙ্গালীর শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
মধ্যযুগে বাংলার সমাজ ও সাহিত্য – বাঙ্গালীর শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি (একাদশ শ্রেণী বাংলা)
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দী ‘অন্ধকারময় যুগ’। সাহিত্য রচনার কোনো অনুকূল পরিবেশ, সামাজিক স্থিতি সেই সময়ে ছিল না। তুর্কি বিজয়ের ফলশ্রুতিরূপে বাংলাদেশে যে প্রবল সামাজিক ও রাষ্ট্রনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা যায়, তাতে সেই সময়পর্বে কোনো সাহিত্যিক নিদর্শন পাওয়া যায় নি, বরং পরবর্তী সময়ের জন্য সুযোগ্য প্রস্তুতিই যেন এই কালপর্বে সংঘটিত হয়েছিল, যার প্রকাশ ও পরিপূর্ণতা কয়েক শতাব্দী ধরে দেখা গেছে।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘মধ্যযুগ’ বলতে খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়। মধ্যযুগের কাব্যভাবনা ও রচনার বিবর্তনের পথরেখা অনুসরণ করে এই যুগের সাহিত্যকে তিনটি প্রধান উপচ্ছেদে ভাগ করা যায় –
- (১) প্রাক-চৈতন্য পর্ব অর্থাৎ চৈতন্যদেবের আবির্ভাবের পূর্ববর্তী পর্ব (চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতাব্দী),
- (২) চৈতন্য পর্ব (ষোড়শ শতাব্দী),
- (৩) চৈতন্যোত্তর পর্ব (সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দী)।
সমগ্র মধ্যযুগ তো বটেই, আধুনিক যুগের জীবন ও সাহিত্যচিন্তা পর্যন্ত চৈতন্যদেবের বিপুল, সর্বাতিশায়ী প্রভাবে এমনভাবে প্রভাবিত, যার তুলনা সমগ্র বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতেই অতুলনীয়। সেই কারণে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের ধারাকে তারই নামাঙ্কিত করে উপবিভাগ করা হয়ে থাকে। প্রাক-চৈতন্যযুগে রচিত সাহিত্যের মধ্যে উল্লেখ্য বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, কৃত্তিবাসী রামায়ণ, মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়, বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসের বৈষ্ণব পদাবলি, তিনটি ‘আদি মনসামঙ্গল কাব্য’।
উত্তর-চৈতন্য যুগের সাহিত্যসম্ভারের মধ্যে রয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের ধারা, কাশীদাসী মহাভারত, চৈতন্য জীবনীসাহিত্য, মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি, আরাকান রাজসভাশ্রিত কবিদের কাব্য, শাক্ত পদাবলি প্রভৃতি।
পলাশির যুদ্ধ (১৭৫৭) বা ভারতচন্দ্রের মৃত্যু (১৭৬০) থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে যুগসন্ধিক্ষণ (মধ্য থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণের) বলা হয়।
- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
- অনুবাদ কাব্যধারা
- মঙ্গলকাব্য
- বৈষ্ণব পদাবলী
- চৈতন্য ও চৈতন্যজীবনী
- ইসলামীয় ধারা
- শাক্ত পদাবলী